মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা

15

রাঙ্গুনিয়ায় প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে গায়েবি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যে তারিখের ঘটনার কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে এ সময় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে অভিযোগ করেছেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহম্মদ মিয়ার মেয়ে তারিন আক্তার তারু। এদিকে মামলার বিষয়টা প্রকাশ্যে আশার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। জানা যায়, গত ৫ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ মিয়ার পুত্রবধূ নাজেহাদ ফারজানা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৩ এ একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে আসামি করা হয় নিজের স্বামী জালাল উদ্দিন, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহম্মদ মিয়ার স্ত্রী মঞ্জুরা বেগম, তার মেয়ে তারিন আকতার তারুসহ পাঁচজনকে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, যৌতুকের জন্য বাদীকে মারধর করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এজাহারভুক্ত আসামি জালাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। মামলার অপর বিবাদী মঞ্জুরা বেগম দীর্ঘদিন ধরে চলাফেরা করতে অক্ষম এবং চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। মামলার এজাহারে উল্লেখিত তারিখে তিনি ঢাকায় ছিলেন। এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, তারা তিন মাস আগে পারিবারিক বিষয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আমি মিমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। পরে এ নারীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। কয়েকদিন আগে শুনলাম একটি মামলা হয়েছে। আসলে যে ঘটনায় মামলা হয়েছে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারাই বলতে গেলে ভিকটিম। মামলার বাদিই শাশুড়িকে নির্যাতন করত বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে সামাজিকভাবেও তা মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মামলার বাদি না মানায় সমাধান সম্ভব হয়নি। প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহম্মদ মিয়ার মেয়ে তারিন আক্তার তারু বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের দাবি একটাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হোক। এবিষয়ে জানতে মামলার বাদি নাজেহাদ ফারজানা অভিযোগে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে কয়েকবার ফোন করলে অপরপ্রান্তে এক পুরুষ রিসিভ করে তার বাড়ি ফটিকছড়ি ও বাদিনিকে তিনি চিনেন না বলে দাবি করেন। এলাকার সর্দার আহমেদ ছবির জানান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পরিবার এলাকায় প্রচুর দান করেন। তারা যৌতুকের জন্য গৃহবধুকে মারধর করতো তা অবিশ্বাস্য। যে তারিখে মারধরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সে তারিখে মামলার আসামিদের কেউ এলাকায় ছিল না। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব মিল্কি মামলার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মামলাটি মামলা তদন্ত করছি। তদন্ত যা উঠে আসবে তাই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে। স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় অনেক ক্ষেত্রে সাজানো অনেক ঘটনা উল্লেখ করা হয়। মামলায় এধরণের সাজানো কিছু রয়েছে কি না তা আমরা খতিয়ে দেখবো।