মিয়ানমারের পেঁয়াজ এলেও দাম কমেনি

66

সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ভারত-মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম সমান হয়ে গেছে। অর্থাৎ ভারত ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে বরাবরের মত ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি। গতকাল বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
এদিকে জেলা প্রশাসনেরও বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা বলে জানালেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক।
বর্তমানে খাতুনগঞ্জসহ দেশের পাইকারি বাজারগুলোতে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাশিক জেলা ও দক্ষিণ ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। চাহিদা থাকলেও সেখান থেকে চাহিদামতো পেঁয়াজ আমদানি করা যাচ্ছে না। আর গত সপ্তাহের শুরুর দিকে পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে মিয়ানমার থেকে। তবে দামে নেই কোনো হেরফের। সঙ্গে এ পেঁয়াজের চাহিদাও নেই বাজারে এমনটাই, বললেন খাতুনগঞ্জের অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রামের বাজারে গত সপ্তাহে মিয়ানমারের পেঁয়াজ আসা শুরু হলেও ভারত ও মিয়ানমারের পেঁয়াজের দামে নেই তেমন কোনো পার্থক্য। এক-দুই টাকা এদিক-সেদিক হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা সমানতালে কেজি প্রতি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে পারেনি। কারণ বাজারে এ পেঁয়াজের তেমন চাহিদা নেই বলে জানালেন খোদ ব্যবসায়ী নেতারা।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার মলিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বলেন, দুই দেশের পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক। কেজি প্রতি ৬০ টাকা করে বিক্রি করছি। তবে ভারতে দামবৃদ্ধির ফলে আমরা আমদানি নির্ভর হচ্ছি মিয়ানমারের পেঁয়াজের প্রতি। আবার ওখানেও টেকনাফ বন্দর থেকে খালাস করতে সময় লাগছে। আর এ সময়ের কারণে দেশের বাজারে প্রভাব পড়ছে। তাছাড়া তুরস্ক এবং মিশর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। আগামী সপ্তাহের দিকে পেঁয়াজ আসা শুরু হলেই দাম আরও কমবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬২ টাকায়। আর পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে আরও জানা যায়, ভারতের ভালো মানের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। সুতরাং মিয়ানমার এবং ভারতের পেঁয়াজের দামের কোনও তফাৎ ছিলো না।
খুচরা বিক্রেতা আলমগীর বাদশা বলেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ বাজারে আসলে ভারতের পেঁয়াজের দাম কমবে এমনটাই আশা করলেও তা কিন্তু হচ্ছে না। কেননা, বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের চাহিদা নেই বললেই চলে।
তিনি আরও বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা গুদাম থেকে ভারতের পেঁয়াজ বাজারে ছাড়ছেন না। যার ফলে বাজারে ভারতের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না এবং সংকট হয়ে আছে। এতে দাম কমার সম্ভাবনা থাকলেও সেটি হচ্ছে না।
খুচরা ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন বলেন, খুচরা পর্যায়েও আমরা প্রতি কেজি ৭০ টাকার নিচে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছি না। কারণ খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তায় দুই থেকে আড়াই কেজি কম দেয়। আমরা বিষয়টি পাইকারি ব্যবসায়ীদের নজরে আনলেও তারা বলে সীমান্ত থেকে যেভাবে এনেছি সেভাবে দিয়েছি। তাই ৭০ টাকার নিচে বেঁচলে পোষায় না।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি বলেন, তুরষ্ক এবং মিশরের পেঁয়াজের যে চালানটি আসার কথা সেটি এখনো আসেনি। ওই চালানটি আসলে দাম আরও কমবে। আর পেঁয়াজের পাইকারি ও খুচরা বাজারে গত রবিবার থেকে মনিটরিং শুরু হয়েছে, যাতে কোনও সিন্ডিকেট পেঁয়াজের দাম বাড়াতে না পারে। আর আমরাও ব্যবসায়ীদেরকে কড়া নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি। একই সাথে কোনও অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।