মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বইমেলা ইফতেখার মারুফ

81

অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে ইফতেখার মারুফের শিশু-কিশোর গল্পগ্রন্থ ‘মেঘের রাজ্যে বীথি’ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো আয়োজিত অভিন্ন বইমেলা সম্পর্কে ইফতেখার মারুফ বলেন, বইমেলা মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামে যে সত্যিকারভাবে আরো ভালো বইমেলা করা যায় সেটার উদাহরণ এটি। প্রতিদিন বইপ্রেমীদের ঢল নামছে মেলায়।
নিজের প্রকাশিত বই সম্পর্কে ইফতেখার মারুফ বলেন, এটি আমার ৩য় গল্পগ্রন্থ। ২০১৭ সনে আমার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘বীথিমণির গল্প’ ও ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ‘সাবুর স্কুলে ফেরা’। ‘মেঘের রাজ্যে বীথি’ গল্পগ্রন্থে জোছনা রাতে, মেঘের রাজ্যে বীথি, ধুত্তোর, পাকা রাঁধুনি, আম্মুরা পচা নয় এই পাঁচটি গল্প স্থান পেয়েছে। সব গল্পের অভিন্ন মূল চরিত্র বীথি। বীথি আমার সৃষ্ট একটি চরিত্র।
শিশু মনস্তত্ত্বকে ধারণ করে লেখা এই গল্পে বীথির মাধ্যমে ছোটদের যাপিত জীবনের নানা অনুসঙ্গ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ছোটরা আধো স্বপ্ন আধো জাগরণে থাকে। ভাবনাগুলো বড়দের সাথে মিলবে না। স্বাভাবিকভাবে বড়দের শাসন যেমন আহত করে তেমনি একটু আদর তাকে আপ্লুত করে। সাধারণত পিঠেপিঠি ভাইবোনের মধ্যে একটু আধটু খুঁনসুটি লেগে থাকে। গল্পগুলিতে দেখা যায় সেজআপুর সাথে বীথির খুঁনসুটি লেগেই থাকে যাতে বেশ মজার খোরাক থাকে-বলেন এ লেখক।
গল্পের বর্ণনা দিতে গিতে গিলে তিনি বলেন, এ গল্পে আরো একটি চরিত্র আছে ইমাদা। এই ইমাদার সাথে বীথির খুব ভাব। সবার ছোট বলে ইমাদা ওকে খুব আদর করে। দেখা যায় ইমাদার প্রতি তার খুব আস্থা তাই অন্যদের চেয়ে তার কথা সে বেশি বিশ্বাস করে। ‘জোছনা রাতে’ গল্পে গরমের সময় রাতে সবাই ছাদে উঠে হাওয়া খেতে গেলে বীথি পাটি নিয়ে আসে। তাতে সবাই বসে পড়ে। বড়আপুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে সে চাঁদ দেখছিল। এক সময় সে ঘুমের জগতে চলে যায়। স্বপ্নে দেখে ইমাদা তাকে নিয়ে গেছে চাঁদের দেশে। হঠাৎ দেখে ইমাদা নিচে পড়ে যাচ্ছে। বীথি ভয়ে চিৎকার দিলে সবই থতমত খেয়ে যায়। পরে দেখে আসলে এতক্ষণ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বীথি স্বপ্ন দেখছে। ‘মেঘের রাজ্যে বীথি’ গল্পে পড়ন্ত বিকেলে বীথি মেঘের আনাগোনা নিয়ে ভাবছিল। হঠাৎ দেখে একটা মেঘ ঘোড়ার রূপ ধারণ তার কাছে আসে। মেঘ তাকে পিঠে চড়িয়ে মেঘের রাজ্যে নিয়ে যায়। ভ্রমণ শেষে মহাসাগরের উপর দিয়ে ফেরার সময় একটা মস্ত দৈত্য তার পথ আটকায়। দৈত্য হেঁচকা টান মারতেই বীথি বন্ধ চোখ খুলে দেখে দৈত্য নয় সেজ আপু ওকে ঝাঁকুনি নিয়ে ধমকের সুরে বলছে সন্ধ্যা বেলায় কেন ঘুমুচ্ছে। ‘ধুত্তোর’ গল্পে হরতালের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় লেখাপড়ার ক্ষতি হয়, তা পোষাতে গৃহশিক্ষক দেয়ার যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে তা দেখে বীথি ভাবে সত্যি হরতাল হবে তাই স্কুলে যেতে হবে না। এ নিয়ে কিছু হাসি ও মজার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাকা রাধুনি গল্পে ছোটদেরও রান্না করার সখ জাগে তা নিয়ে যে মজার ব্যাপার ঘটে তা তুলে ধরা হয়েছে। ‘আম্মুরা পচা নয়’ গল্পে আম্মু যখন শাসন করে তখন তাকে পচা মনে হয় আবার যখন আদর করে তখন মনটা আম্মুর প্রতি প্রচন্ড ভালবাসায় ভরে যায়। তা নিয়ে এই গল্প। এই গল্পগুলি শুধু ছোটদের নয় বড়দের ভাল লাগবে।