মিরসরাইয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা প্রভাবশালীদের দখলে

45

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে টয়লেট! দুইপাশে জায়গা দখল করে বর্ধিত করা হয়েছে বসতবাড়ি। প্রায় ৪৯ বছর ধরে এভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির তৎপরতায় কয়েকবার মাপ-জোখ হলেও প্রভাবশালীর কবল থেকে মুক্ত হয়নি স্কুলের মাঠটি। এটি মিরসরাই উপজেলার ৯নং সদর ইউনিয়নের উত্তর তালবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র। তবে দখলদারদের একজন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. রফিক বিষয়টি স্বীকার করে পুনরায় মাপের পর জায়গা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ।
ম্যানেজিং কমিটির সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টির ১২ শতক জমি বেদখল হয়ে আছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা। ১৯৭০ সালে এলাকার ওমর খান স্কুলের অনুকূলে ১০ শতক জমি দান করেন। ওই সময় থেকে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মো. ইব্রাহিমের চার ছেলে মো. ইসমাইল, মফিজুর রহমান, মো. সেলিম ও সাবেক ইউপি মেম্বার মো. রফিক জায়গাটির উপর বসতবাড়ি নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছেন। স্কুলের আরও ২ শতক জমি দখল করে বাড়ি করেছেন নয়ন নামের আরেক স্থানীয় ব্যক্তি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, মাঠে দখলদাররা করেছেন টয়লেট। ফলে একদিকে যেমন স্কুলের মাঠ দখল হয়ে আছে এবং অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। গত বছর আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। তারই প্রেক্ষিতে এসিল্যান্ড এসে মাপ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিষয়টি ঝিমিয়ে পড়ে। এখন আবার ম্যানেজিং কমিটি উদ্যোগ নিয়েছে জায়গা পরিমাপ করার জন্য। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতা থাকলে বিদ্যালয়ের জায়গাটি প্রভাবশালীর কবল থেকে মুক্ত করা যাবে।
জায়গা দখলের বিষয়টি স্বীকার করেছেন দখলে থাকা ইব্রাহিমের পুত্র সাবেক ইউপি মেম্বার মো. রফিক। তিনি পূর্বদেশকে বলেছেন, আমরা অস্বীকার করছি না কিছু জায়গা আমাদের দখলে রয়েছে। তবে আমার বাবা ক্রয়সূত্রে জায়গার মালিক। মাপ-জোখের পর সীমানা নির্ধারণ করা হলে জায়গা ছেড়ে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে বেদখলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো কথা বলেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. সালাহ্ উদ্দীন। তিনি আরও বলেছেন, স্কুলের জায়গা নিয়ে স্পষ্ট দলিল রয়েছে। এতদিন প্রভাব খাটিয়ে তারা জায়গা দখল করেছেন। এখন আমরা চাচ্ছি স্কুলের জায়গা স্কুল ফিরে পাক। তার জন্য উচ্ছেদ করতে গেলে প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন সুলতানার সাথে। তিনি পূর্বদেশকে বলেছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করার সুযোগ নেই। প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে এসিল্যান্ডের সহযোগিতায় সীমানা নির্ধারণ করবেন। যদি এক্ষেত্রে আমাদের কোনো সহযোগিতার দরকার হয়, তাহলে অবশ্য আমরা সেটা করবো।