মিরসরাইয়ে ইসলামী মহাসম্মেলন

54

হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচীব ও হাটহাজারী দারুল উলূম মাদ্রাসার মুহাদ্দিস হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, কাদিয়ানীরা মীর্জা গোলাম কাদিয়ানীকে নবী মানে তারা মানুষকে ধোঁকা দেয়, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নবী মানে না। সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবী কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। তারা এই দেশে থাকতে পারবে কিন্তু মুসলমান হিসেবে নয়, কাফের হিসেবে; সংখ্যালঘু হিসেবে। তারা মুসলমানের পরিভাষা ব্যবহার করতে পারবে না, তাদের মসজিদকে বলতে হবে গীর্জা, মুসলমানের গোরস্তানে তাদের দাফন করা যাবে না।
তাদের জানাযার নামাজ পড়া হারাম, তাদেরকে বিয়েশাদী করা হারাম; তাদের সাথে বিয়েশাদী মানে হিন্দু ও বৌদ্ধদের সাথে বিয়েশাদী। তারা এদেশে মুসলমান হিসেবে বসবাস করছে তারা এদেশে ইজতেমা করার দুঃসাহস করেছে। মিসর, সিরিয়া, পাকিস্তানসহ অনেক বড় বড় দেশ কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাই অবিলম্বে বাংলাদেশেও রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করা হোক। তিনি আরো বলেন, আমরা ৮১ জন আলেমওলামা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সম্প্রতি দেখা করি তখন আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি মক্কা ও মদিনার পবিত্রতা নষ্ট করছে কাদিয়ানীরা তাদেরকে আপনি যদি অমুসলিম ঘোষণা না করেন তাহলে সেই গুনার ভাগী আপনিও হবেন। তাদেরকে যাকাত দিলে যাকাত আদায় হবে না, তারা কাফের। বিভিন্ন প্রয়োজনে ইসলামকে রক্ষা করতে হলে শতকরা ৯০ জন মুসলমানের দেশে কাদিয়ানীদেরকে অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
আমাদের আন্দোলনের ধাক্কায় তাদের ইজতেমা বন্ধ করা হয়েছে, আমি সরকারকে সতর্ক করে বলবো ওদের এরকম ইজতেমা যদি হয় তাহলে এদেশে লক্ষ লক্ষ লাশ পড়বে।
সরকারের কাছে আমি দুইটি দাবি জানাচ্ছি একটি হলো তাদেরকে অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা, আরেকটি হলো তাদেরকে কোন ইজতেমা বাংলাদেশে করতে দেওয়া যাবে না। ওদের কোন ইজতেমা হলে এদেশে লক্ষ লক্ষ লাশ পড়বে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিরসরাইয়ে ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপীনাথপুরে অবস্থিত মোহাম্মদীয়া আজিজুল উলূম (তেমুহানী) মাদ্রাসার ৩ যুগ পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলনে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের অন্যতম কর্মসূচীর মধ্যে ছিল ১৯ জনকে কাসেমী পদক প্রদান, ৩৪ জনকে রাবেয়া বসরী পদক প্রদান, ৪৩ জনকে দস্তারবন্দী (সম্মাননা পাগড়ী) প্রদান। ইসলামী সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ক্বারী নুরুজ্জামান ও দ্বিতীয় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শিক্ষানুরাগী আলহাজ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।
মাদ্রাসার নির্বাহী পরিচালক মাওলানা জমির উদ্দিনের সার্বিক তত্বাবধানে সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের মাসজিদুল হারাম মক্কাতুল মুকাররমার মুফতি শাইখ আব্দুল্লাহ হামেদ সাম্ভু, হংকং মজলিসে তাহাফফুজ খতমে নবূওয়াতের চেয়ারম্যান শাইখ ক্বারী মুহাম্মদ তৈয়ব কাছেমী, সাউথ আফ্রিকার শাইখ মাহমুদ আদিউলা, শ্রীলংকার আল্লামা মুফতি আব্দুল্লাহ মারুফ, সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক আহনাফ সেন্টারের চেয়ারম্যান শাইখ মিজানুর রহমান হানাফী, এনটিভি ইউকে’র নিয়মিত ধর্মীয় আলোচক শাইখ সালা উদ্দিন জাহাঙ্গীর। এ সময় ওয়ায়েজিন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জামিয়া বাবুনগর মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, হাটহাজারী দারুল উলূম মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, চট্টগ্রামের পটিয়ার মাওলানা জাহেদুল্লাহ, ঢাকার মাওলানা মুফতি রেজওয়ান রফিকী, চট্টগ্রামের আল্লামা ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসেন, চট্টগ্রামের মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে সংগীত পরিবেশন করেন জাগ্রত কবি আল্লামা মুহিব খান।