মিরসরাইয়ের শাহ গোলাম রহমান (রহঃ) শিশু সদনে ফ্যান দিলেন থানার ওসি

37

গরমে অতিষ্ট জনজীবন, নানা বয়সী মানুষের সাথে সাথে শিশু শিক্ষার্থীদেরও একটু বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। মিরসরাইয়ের মস্তাননগর জামেয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শাহ গোলাম রহমান (রহঃ) শিশু সদনের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘসময় ধরে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিল, ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে পারছিল না পড়াশোনায়। ওই এতিমখানায় ৭২ জন এতিম ও দুস্থ শিশু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ২ টি ভবনের ৫ টি রুমে তাদের পড়াশোনা ও থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কোন কক্ষেই ছিল না পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা। বিষয়টি জানতে পারেন জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইফতেখার হাসান পিপিএম (বার)। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১০ টি সিলিং ফ্যানের ব্যবস্থা করেন। তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই এতিমখানার এতিম শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইফতার করেন এবং শিক্ষার্থীদের হাতে ১০ টি ফ্যান তুলে দেন। ওসির এই ব্যতিক্রমী মানবিক সাড়ায় খুশি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
জোরারগঞ্জ থানার আয়োজনে ফ্যান বিতরণ ও এতিমদের নিয়ে ইফতার উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা এতিমখানার দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষক গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে ও মেজবাহ উদ্দিনের উপস্থাপনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন জোরারগঞ্জ থানার ওসি ইফতেখার হাসান, মস্তাননগর শাহ কালা (রহঃ) প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিম মাষ্টার, মিরসরাই প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শারফুদ্দীন কাশ্মীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম, সাংবাদিক আবু সাঈদ ভূঁইয়া, এম মাঈন উদ্দিন, এম আনোয়ার হোসেন, বাবলু দে, শিক্ষক আব্দুল আউয়াল, মো. ইব্রাহীম প্রমুখ।
এতিম শিশু শিক্ষার্থী ফয়েজুর রহমান, তাজুল ইসলাম ও সম্রাট বলেন, এতদিন গরমের কারণে আমরা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারতাম না এখন মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবো। ওসি সাহেবের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, উনি এই এতিমদের নিয়ে ভেবেছেন এবং ফ্যানের ব্যবস্থা করেছেন।
মাদ্রাসার আরবির প্রভাষক গোলাম সরওয়ার জানান, ১৯৭৩ সালে এই মাদ্রাসায় এতিমখানা চালু হয়, পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে মাদ্রাসার কার্য্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীদের কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্যান না থাকায় তারা ঠিকমতো পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারতো না। ওসি ইফতেখার হাসান বিষয়টি জানতে পেরে ১০ টি ফ্যান দেওয়ায় উনার প্রতি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কৃতজ্ঞ।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইফতেখার হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্যান নেই বিষয়টি জানতে পেরে আমার খুব খারাপ লাগলো। বিষয়টি শোনার পরপর আমি সিদ্ধান্ত নিই যতটা ফ্যান লাগুক আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে দিব। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমাকে ১০ টি ফ্যানের চাহিদার কথা জানান। আমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানাই, যেদিন ফ্যানগুলো তুলে দেব সেইদিন এতিম ও দুস্থ শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে ইফতারও করবো। এতিমদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে।’