‘মালিকদের স্বার্থ রক্ষার’ মজুরি কাঠামো সংশোধন চান সাংবাদিকরা

38

সরকারের ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামোতে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মীদের বদলে মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে অভিযোগ করে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। বছরে সংবাদকর্মীদের দু’টি গ্র্যাচুইটি ও তাদের আয়কর মালিকদের পরিশোধের প্রচলিত নিয়ম বহাল রেখে তারা নতুন করে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার সুপারিশ করেছেন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক স্বার্থ সুরক্ষা পরিষদ আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের বিদ্যমান সংকট : সাংবাদিকদের স্বার্থ সুরক্ষা’ নিয়ে গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবি তোলা হয়।
এছাড়াও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির আলোচনা এবং মজুরি কাঠামোতে সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে সমালোচনাও উঠে আসে বৈঠকে। সাংবাদিক নেতা আব্দুল জলিল ভূইয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে নতুন ওয়েজবোর্ডের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অধিকার হরণ করেছেন। সাংবাদিক সংগঠনগুলো যে এ ওয়েজবোর্ডকে অভিনন্দন জানিয়েছে, তাতে লজ্জা পাই। আমার কাছে মনে হয়, অথর্ব এ ইউনিয়ন দিয়ে কিছু হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘ইউনিয়নে নতজানু ও আপসকামী লোকজন। অধিকারের কথা বলতে তারা কেন রাস্তায় নামতে পারলো না?’
সাংবাদিক অনুপ কুমার খাস্তগীর বলেন, সাংবাদিকদের ইউনিয়নের অধিকার নিয়ে কোনো ডিবেট হয় না, পলিসি মেকারদের সাথে আলোচনা হয় না। মাথা উঁচু করা সাংবাদিকতা না থাকলে দেশ রসাতলে যাবে। খবর বিডিনিউজের
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘এ ওয়েজবোর্ড সাংবাদিকতা সংকুচিত করার উদ্দেশ্যে করেছে রাষ্ট্র- গ্রাচুইটি দু’টি থেকে একটিতে নামানো হয়েছে। এটি মালিক স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য করেছে, শ্রমিক স্বার্থের জন্য করা হয়নি। অধিকার ক্ষুন্ন করেছে’।
আয়কর পরিশোধের ভার সংবাদপত্রকর্মীদের বদলে আগের মতোই মালিকদের পরিশোধ করতে হবে বলে তিনি দাবি জানান। দাবি-দাওয়া ও পাওনা আদায়ে সমস্যার জন্য সংবাদকর্মীদের ব্যক্তিগত দুর্বল অবস্থানকে দায়ী করে সোহেল বলেন, যারা চাকুরিচ্যুত হচ্ছেন, তারা ইউনিয়ন অফিস পর্যন্ত আসেন না।
বাংলাদেশ সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র (বিজেসি) ট্রাস্টি রাশেদ আহমেদ বলেন, ‘টেলিভিশনগুলোর জন্য একটি নিয়ম থাকা প্রয়োজন। অনেক টেলিভিশনে বেতন হয় না, অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। টেলিভিশনের জন্য একটি ওয়েজ বোর্ড করার দাবি জানাই, এখনো পর্যন্ত এর ভিত্তি তৈরি হয়নি’।
কর্মীদের বেতনভাতা ঠিকমতো দেওয়ার জন্য সংবাদপত্র শিল্প মালিকদের প্রনোদণা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি বলেন, ওয়েজ বোর্ডে অসঙ্গতি থাকলে দূর করতে হবে। সাংবাদিক ও কর্মীদের বাদ দিয়ে সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিকাশ সম্ভব নয়।
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব সাবান মাহমুদ বলেন, নোয়াব যে অবস্থান নিয়েছে সাংবাদিকদের স্বার্থ ধ্বংস করার জন্য এর জোরালো প্রতিবাদ করতে ইউনিয়ন আন্দোলন করবে’।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুল আলম বলেন, নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগগুলো জানালে আমরা বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
বাংলাদেশ সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র (বিজেসি) ট্রাস্টি রাশেদ আহমেদ বলেন, ‘টেলিভিশনগুলোর জন্য একটি নিয়ম থাকা প্রয়োজন। অনেক টেলিভিশনে বেতন হয় না, অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। টেলিভিশনের জন্য একটি ওয়েজবোর্ড করার দাবি জানাই, এখনো পর্যন্ত এর ভিত্তি তৈরি হয়নি’।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির সদস্য খায়রুজ্জামান কামাল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাংবাদিক নেতা কাজী রফিক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া কাজল, সাংবাদিক সাজ্জাদ আলম খান তপু অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।