মানুষকে জিম্মি করার ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন

20

নতুন সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়ানো, পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে ভীতি সঞ্চার, অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট ডেকে দেশকে অচল করার ষড়যন্ত্র, সড়ক-মহাসড়কে যান চলাচলে প্রকাশ্যে বাধা, দেশের গণপরিবহন সেক্টরে অরাজকতা সৃস্টিতে উস্কানি প্রদানের প্রতিবাদ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
এছাড়া অঘোষিত গণপরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার এবং এ ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িতদের কঠিন ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিও দাবি করেছে ক্যাব।
গতকাল সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান এ দাবি জানান।
ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, চিহ্নিত স্বার্থান্বেষী মহল গণপরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি, নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদবাজি অব্যাহত রাখতে দেশবাসীকে জিম্মি করে বারবার ষডযন্ত্রমুলক কাজে জড়িত হলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মহলটি জনগণের বহুল প্রত্যাশিত নতুন সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে গুজব ছড়িয়ে আইন বাস্তাবায়নে বাধা দিচ্ছে। গণপরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য সৃস্টিতে দীর্ঘদিন ধরে অপকর্ম করে আসছে। নতুন আইনে তাদের অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে অবৈধ ঘর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে অত্যাধিক প্রণোদনা দেওয়ায় তারা বারবার জনগণকে জিম্মি করে অবৈধ ধর্মঘট আহব্বানসহ আইন প্রয়োগে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে বাধা দিলেও সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুরস্কার হিসাবে তাদেরকে মন্ত্রী, এমপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা বানাচ্ছে। আর এ খাতে অন্যতম অংশীজন ভোক্তারা কোন প্রণোদনা দূরের কথা, আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সদস্যও হতে পারছে না। ফলে সড়কে নৈরাজ্য থামছে না। সড়ক পরিবহন খাতে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা মিলে যাবতীয় নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যার খেসারত দিচ্ছে জনগণ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএরআটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়া কঠিন, কারণ সবকিছুর ওপর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা রাজত্ব করছে। সড়ক পরিবহন খাতে নৈরাজ্য থামাতে হলে ভোক্তা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সম অংশগ্রহণ নিশ্চিত জরুরি।
গণপরিবহন সেক্টরে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ যেকোন দাবি-দাওয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, একশ্রেণির পরিবহন মালিক ও শ্রমিক আইন প্রয়োগের আগেই আইন সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও ভীতি সৃস্টি করছে। অথচ এই আইনে ভোক্তাদের কোন অংশগ্রহণ বা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়নি। দাবি আদায়ের নামে জনগণকে জিম্মি করে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দেশকে অচল করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করে জরুরিভিত্তিতে কর্মবিরতির নামে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে হবে।
বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরাপদ সড়ক ও সড়কে নৈরাজ্য ঠেকাতে গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রনয়ণ করে। পরে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রীর নেতৃত্বে আইন বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে সুপারিশমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১১১টি সুপারিশ প্রস্তাব করলেও আইন বাস্তবায়নে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা প্রতিবন্ধকতা প্রদান করছেন, যা খুবই দুঃখজনক। বিজ্ঞপ্তি