মানবিক কাজের উদ্যোক্তারা এসেছেন এক ছাতার নীচে

105

ভুমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি বলেছেন, চট্টগ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের কাজগুলো জনসন্মুখে আসার সুযোগ ছিল না। পূর্বকোণ তাদের এক ছাতার নিচে এনে মিলনমেলা করেছে। তারা এর মধ্য দিয়ে অনুপ্রাণিত হবেন। দর্শনার্থীরা তাদের দেখে মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হবেন। ব্যতিক্রমধর্মী এই ধরনের মেলা দেশের প্রথম উল্লেখ করে আয়োজনের জন্য তিনি পূর্বকোণ পরিবারকে ধন্যবাদ জানান। গতকাল নাসিরাবাদ বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দৈনিক পূর্বকোণ আয়োজিত ‘পরিবর্তনের কারিগর’-এ অংশগ্রহণকারী মানবিক মেলা ’১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধনের পরে মন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখে অংশগ্রহনকারিদের সাথে কথা বলেন। এর আগে সকাল ৯টায় জমিয়তুল ফালাহ মোড় থেকে বর্ণাঢ্য সাইকেল র‌্যালি শুরু হয়ে মেলা প্রাঙ্গণে শেষ হয়। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দিনব্যাপী মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। তারা পরিচিত হয়েছেন পরিবর্তনের কারিগরদের সাথে। জানার সুযোগ পেয়েছেন তাদের কাজের ক্ষেত্র, কর্মকৌশল এবং কাজের এলাকা নিয়ে।
দৈনিক পূর্বকোণ এর পরিচালনা সম্পাদক, প্রকাশক ও পূর্বকোণ গ্রুপের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দৈনিক পূর্বকোণ এর সম্পাদক ডা. ম রমিজউদ্দিন চৌধুরী। অংশগ্রহণকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার বাদল সৈয়দ। বিকেলে প্রেরণাদায়ক বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটর উপাচার্য প্রফেসর ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী এবং আইআইইউসিসি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. কে এম গোলাম মহিউদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন পূর্বকোণ এর পরিচালক জাসির চৌধুরী, শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম, দৈনিক পূর্বকোণ এর চীফ রিপোর্টার নওশের আলী খান, সিনিয়র সাব এডিটর মোরশেদ আলমসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেবুন নাহার শারমিন ও মাসুম বিল্লাহ আরিফ।
মন্ত্রী জাবেদ বলেন, পূর্বকোণ সবসময় একটু ব্যতিক্রম ধর্মী কিছু করে দেখায়। তাঁরা যারা ভাইয়েরা আছেন তাদের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা আছে। এই ধরণের মেলায় আরো নতুন নতুন কিছু চিন্তা চেতনা নিয়ে পূর্বকোণের যে কর্মকাÐ চালিয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতেও তারা চালিয়ে যাবেন। পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ইউসুফ চৌধুরীকে স্মরণ করে বলেন, তিনি আমাদের চট্টগ্রামের একজন অত্যন্ত বড় মুরব্বী ছিলেন। তাঁর অবদান ও সেবা চট্টগ্রামবাসী স্মরণ করে। পূর্বকোণ এর মরহুম সম্পাদক স্থপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করে বলেন, তছলিম ভাইও ভালো কাজ করতে চাইতেন, ভালো কাজ করেছেন। তিনি সবসময় বলতেন, যদি কোন ভালো কাজের সুযোগ থাকে তুমি আমাকে একটু পাশে রাখবা বা আমারও যদি কোন সুযোগ থাকে আমিও কিন্তু তোমাকে পাশে রাখব। স্বাগত বক্তব্যে দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. ম রমিজউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দৈনিক পূর্বকোণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও আলোকিত সমাজ গঠনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি সকল বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এই মেলায় এসে আপনারা দেখুন, সমাজের বিভিন্ন স্তরে অসংখ্য সামাজিক সংগঠন সমাজের জন্য কাজ করছে। আপনারা তাদের পাশে দাঁড়ান। সহযোগিতা করে সমাজ পরিবর্তন এবং সমাজের কল্যাণে অংশীদার হওয়ার সুযোগ নিন।
কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার বাদল সৈয়দ বলেন, চট্টগ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মানবিক কাজ করে এমন সব সংগঠনকে একটি নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট ছাদের নিচে এক করে তারা একে অপরের সাথে যোগসূত্রের সৃষ্টি করেছেন সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। সমস্ত সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনি একটি কুকুর ছানাকে ঝড়-তুফান থেকে রক্ষার কাহিনী বর্ণনা করে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য হচ্ছে পরম করুণাময় ইচ্ছে করলে কুকুর, বেড়াল করে আমাদের পৃথিবীতে পাঠাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব করে পাঠিয়েছেন। শুধুুমাত্র মানুষ হিসেবে জন্মানোর ঋণ শোধ করতে এক জীবন কেটে যাওয়ার কথা। এই ঋণ যদি শোধ করা না যায়, এই জীবন বৃথা। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হিসেবে জন্মানোর পরও যখন মানুষ অমানুষ হয়ে যায়।
বিকালে প্রেরণাদায়ক বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, চট্টগ্রামের সাহসী পুরুষ মরহুম মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। যাকে আমরা চাচা বলে ডাকতাম। চট্টগ্রামকে নান্দনিক ও বাণিজ্যিক রাজধানী করার জন্য তিনি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মাঝে অপার সম্ভাবনা আছে। তবে বড় হয়ে কে কি হবে সেটা কেউ বলতে পারে না, সেটা ভালোও হতে পারে, আবার খারাপও হতে পারে। এটা নির্ভর করবে তোমাদের উপর।
আইআইইউসি’র উপাচার্য বলেন, পূর্বকোণের তত্ত্বাবধানে পরিবর্তনের কারিগরের মাধ্যমে যে উদ্যোক্তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটি খুবই প্রশংসনীয় কাজ। পরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। খবর বিজ্ঞপ্তির