মাননীয় ডিপুটি স্পিকারের তওবা

52

আবদুল হাই

দীর্ঘদিন অবসরে ছিলাম। তবে সইচ্ছায় নয়। নিতান্ত বাধ্য হয়ে। সেই বাধ্য বাধকতা আমার ছেলে মেয়ের পক্ষ থেকে সৃজিত। মায়েরা বাচ্চাদের গতিবিধির প্রতি নজরদারির জন্য কোমরে ঝুন্ঝুনি বেঁধে দিতেন কালো তা¹ি দিয়ে সন্তানের গতিবিধির প্রতি মায়েদের তীক্ষèদৃষ্টি সংরক্ষণের জন্য ঝুন্ঝুনির শব্দ বেশ কাজ দিতো। একাজটা বাঙ্গালী মায়ের রীতিবদ্ধ সংস্কৃতির অঙ্গ বলা সঙ্গত। সন্তানদের প্রতি খেয়ালীপনা এ বিষয়টা মাতৃত্বের প্রকৃত মমত্ববোধ বহিঃপ্রকাশ রূপে গন্য করা যায়। আমার ‘মা’ নেই। এতো বুড়োর সচরাচর ‘মা’ না থাকারই কথা। আমার ক্ষেত্রে এর অন্যথা হয়নি। তারপরও ‘মা’ শব্দটা আমার চিত্তের সঙ্গে সংমিশ্রিত, যে শব্দটা নির্বাসন দেয়া আজ অবধি সম্ভব হয়নি। আমার ৪র্থ বর্ষি সম্মান শ্রেণীর মেয়ে মাকে ‘মা’ রূপে প্রতিনিয়ন সম্বোধন করে থাকি। ও আমার নুসরাত! শিশুকালে সোহাগ করে ও সকিনা ডাকতাম। ও নামটি আমার (কলামিস্ট) বন্ধু মুসফিক বহাল রেখেছে। আসলে ও নামে আদর সোহাগের প্রাচুর্য্যতা আছে। যাক ‘মা’ আমার খুঁটিনাটি সবকিছুই দেখবাল করে শুধু কোমর জুড়ে কালো তা¹ির সাথে ঝুন্ঝুনি পড়া ব্যতিরিকে। হয়তবা ওর মনে এসেছে সময়ের সঙ্গে তা বেকাপ্পাা লাগার জিনিস।
এখনও বৈশ্বিক মহামারী করোনা বিদ্যমান। সে জন্য আমার প্রতি এতো তীক্ষè তদারকি। ঘর থেকে পালাবার জো নেই। ও ডাকগিরা মনটা হিম হয়ে যায়। তাই আমি গৃহবন্দি। অনিদির্ষ্ট সমেয়র কয়েদি। পৃথিবীকে মন-চোখ উন্মক্ত করে দেখার দারুন প্রত্যাশা। কিন্তু করার কিছু নেই। একেবারে ইচ্ছের বিরুদ্ধে অবস্থান করে লেখা লেখি শিকেই তুলে রেখেছিলাম। তাই প্রিয় পাঠকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
গত ১৪ জুন ২০২০ সংসদে ডিপুটি স্পিকারের নেতৃত্বে সংসদে মোনাজাত ও তওবা পরিচালিত হয়। তা দেখা এবং তওবা অনুষ্ঠান পাঠ করা সুযোগ আমার হয়। তাঁর এ মোনাজাত এবং তওবা দেশপ্রেমের এক উজ্বল দৃষ্টান্ত। ‘হুব্বুল ওয়াতানু মিনাল ঈমান’ স্বদেশ ভূমিকে ভালবাসা ঈমানের অংশ।
আল্লাহর আর্শিবাদ পেতে, আসামীর মতো দÐয়মান হয়ে ক্রন্দরত অবস্থায় ডিপুটি স্পিকার বলে, ‘হে আল্লাহ আমরা করোনার মত আসমানী গজব থেকে আপনার সাহায্য চাই তিনি বলেন, আজ সরকারের মন্ত্রী ও এম.পি রা ভুল ক্রুটির জন্য তওবা করছেন। ঐ মুনাজাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাজিম এবং ধর্মমন্ত্রী (প্রতিমন্ত্রী) শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মৃত্যুতে আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। সংসদ নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ সংসদে উপস্থিত সবাই এই মোনাজাত ও তওবাতে অংশগ্রহণ করে। আল্লাহ রহমানুর রহিম বান্দা তাঁর কাছে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করুন এতে তিনি দারুন খুশী এবং সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা করে দেন। কারণ আল্লাহ ক্ষমাশীল। ডিপুটি স্পিকার আল্লাহর কাছে এমর্মে অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেন ‘আমরা তোমার কাছে তওবা করছি। আল্লাহ তুমি বলেছো তুমি তওবা পছন্দ করো। আমরা তওবা করছি আমরা আর গুনাহ করবো না। আমরা নিজেরা ভালোভাবে চলাফেরার চেষ্টা করবো। তরপরও কি তুমি আমাদের প্রতি রহমত করবে না। তিনি পুনর্বারে আবেগী কন্ঠে বলেন ‘দয়া করে তুমি আমাদের প্রতি দয়া করো। তুমি যদি আমাদের খালি হাতে ফিরিয়ে দাও তাহলে তোমার নামের অমর্যদা হবে। করোনা নির্মূলের জন্য অশ্রæঝরা কণ্ঠে তিনি বলেন ‘আমাদের তুমি করোনা থেকে সুরক্ষা দান করো’, তোমার গজব আজাব তুমি তুলে নাও মাওলা। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তুমি রহমত বর্ষণ করো। তোমার রহমতের শামিয়ানা দিয়ে বাংলাদেশকে ঢেকে দাও। তুমি সবই পারো আমাদেরকে হেফাজত করো। তিনি অকপটে স্বীকার করেন আমাদের ঈমানের জোর খুব কম। তিনি এইও আরজ করেন জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আল্লাহ যেন রহমতের শামিয়ানা দিয়ে ঢেকে রাখেন।
মাননীয় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সংসদে এ মোনাজাত একটি অনন্যদৃষ্টান্ত। এরপূর্বে সংসদে স্পিকার এমন কান্নজড়িত কন্ঠে উন্মুক্তভাবে ভুল ক্রুটির ব্যাপারে আবেগ আপ্লুত হয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থী হতে দেখা যায়নি। ঈমানী দুর্বলতার জন্য দোষ স্বীকার করতে দেখা যায়নি। তওবা করতে দেখা যায়নি। যা মনে হয় এবারই প্রথম দৃষ্টান্ত, যে নিজের অপরাধ অকপটে স্বীকার করে সেই নিজের জন্য উত্তম সাক্ষী এবং বিবেকবান মানুষ। আর যাঁরা রাষ্ট্রের কর্মকাÐে সম্পৃক্ত তাদের দায়দায়িত্ব অত্যধিক। দায়িত্ব পালনে অবহেলা আর অনিয়ম হলে তাঁরা ১৮ কোটি মানুষের কাছে দায়ী থেকে যাবে। প্রকারান্তে ডিপুটি স্পিকার একথা বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করা সঙ্গত। তিনি যে সবার পক্ষ থেকে ইসতেগফার করেছে নিশ্চয় মহান আল্লাহ তাঁর এ আর্জি কবুল করবেন।
মহান সংসদে যাঁরা আছেন তাঁরা বিবেক বুদ্ধিতে অত্যন্ত সমৃদ্ধ, মাননীয় ডিপুটি স্পিকার মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে আত্মশুদ্ধির যে অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন তা পালনের দায়িত্ব কেবল সাংসদের নয় আমাদের এতদ্ব্যাপারে দায়িত্ব আছে। স্বীয় জন্মভূমি এবং স্বাধীনতা অমূল্য রতন। একথা আমাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে উপলব্ধী করতে হবে। এই বোধোদয় না হওয়া অবধি আমাদের উপর বলা মুসিবত অব্যাহত থাকবে। যে জাতির কাছে স্বদেশ ভূমির প্রতি মমত্ব বোধের ঘাটতি সে জাতি কখনও উন্নতির উচ্চ আসনে অবস্থান করা দূরহ। বৈশ্বিক মহামারীর এই দুর্যোগময় মুহূর্তে আমরা যদি পারস্পরিক সহযোগিতার হস্তদিয়ে এগিয়ে আসতে পারি এ সংকট থেকে উত্তোরণ আরো বেশী সহজতর হবে। ডিপুটি স্পিকার সাহেবের ইসতেগফার জাতির মুনাজাত আত্মশুদ্ধির সুবর্ণ সুযোগ। যারা আন্তরিকভাবে উপলব্ধী করেছেন কেবল তাদের জন্য প্রয়োজ্য। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ-পদবী নিয়ে যারা পুকুরচুরি নয় আজ অবধি মহাসাগর চুরি অনুসরণ ককরে যাচ্ছে তাদের জন্য তওবা নামক বিষয়টা হাস্যস্পদ বলে প্রতীয়মান হয়। যখন পবিত্র সংসদে এক সাংসদ অন্য সাংসদের আইপ সমূহ উত্তাপন করে অন্তরবাস পর্যন্ত খুলে ফেলে তখন নিশ্চয় চোখের পাতা বন্ধ হবার উপক্রম। সাম্প্রতিক বিরোধী সাংসদ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে অত্যন্ত রুচিবদ্ধ ভাষায় যে তুলোধুনো করেছেন তা দুঃখজনক এবং ১৮কোটি মানুষের হক হরনের সামিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি দমনের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। জাতি তাঁর এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়। এক্ষেত্রে তাঁর দ্রæত পদক্ষেপ প্রসংশার দাবি রাখে।
করোনা মোকাবিলা লকডাউনের কারণে দরিদ্র, হতদরিদ্র, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তদেরকে ত্রাণ, আর্থিক অনুদান প্রদানের ব্যবস্থাগ্রহণ অনন্য দৃষ্টান্তের পর্যায়ে পড়ে। এতে তাঁর গ্রহণযোগ্য বেড়েছে। তাঁর অর্জিত সাফল্য ধরে রাখবার প্রয়াসে দুর্নীতির মূল উৎপাটন করা আবশ্যক। তাঁর প্রথম পরিচয় তিনি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে পিতার আদর্শের রশি ধরে বাচ বিচারের তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র দেশের স্বার্থে বর্ণচোরা দুর্নীতি বাজদের ছাঁটাইর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জাতি এটাই প্রত্যাশা করে। সংসদ কক্ষে বিরোধীপক্ষ গড় গড় করে দুর্নীতির ফিরিস্থি বর্ণনা করে যাবে আর তা শুনতে হয় মাননীয় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী মহোদয়কে। একটা কলার সরবরাহ মূল্য ১০০০ টাকা ধরা হলে দুর্নীতি (১০০০-৫) = ৯৯৫ পরিমাণ বেড়েছে। দুর্নীতি করার কোন চক্ষুলজ্জা আছে বলে মনে হয়না। হে আল্লাহ আমার প্রিয় দেশটিকে অন্তত দুর্নীতি বাজদের থেকে হেফাজত করুন। বঙ্গবন্ধুকে এবং তাঁর বেশভুষাকে মূলধন রূপে ধারণ করে এসব বর্ণচোরাগণ দেশের প্রচÐ ক্ষতি করে আসছে। দায়িত্ব গ্রহণ করার চাইতে সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করাই বড়ো কথা, হযরত আবু বক্কর রা: ইসলাম জাহানের প্রথম খলিফা, তিনি কাপড়ের ব্যবসা করতেন। একবার তিনি তাঁর ব্যবসা কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন পথিমধ্যে সাক্ষাৎ হয় হযরত ওমর (রা:) কোথায় যাচ্ছেন। উত্তরে আবু বক্কর (রা:) বলেন তিনি তাঁর ব্যবসা কেন্দ্রে যাচ্ছেন। স্পষ্টভাষী হযরত ওমর ফারুখ বলেন, ‘আপনি ইসলাম জাঁহানের খলিফা দু’টো দায়িত্ব এক সাথে সম্পন্ন করাতো সম্ভব নয় আপনি ব্যবসা ছেড়ে দিন সেই থেকে হযরত আবু বক্কর (রা:) ব্যবসা ত্যাগ করে রাষ্ট্রিয় কাজে মনোনিবেশ করেন। এরপর থেকে রাষ্ট্রিয় কোষাগার থেকে তাঁর পারিবারিক খরচাপাতির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের নিয়ম চালু হয়। একবার তাঁর কাছে কিছু অর্থের আবশ্যক ছিলো তাঁর স্ত্রী সঞ্চিত অর্থ থেকে তাঁকে সহায়তা প্রদান করেন। স্ত্রীর সঞ্চয় প্রবণতার কথা অবগত হয়ে তিনি ঐ পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ স্বেচ্ছায় কম নেওয়া শুরু করেন। আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল ৬০-৬৫ বছর। যারা বেশী আয়ু পায় বড়ো জোরে ৮০ বছর। সেঞ্চুরী করতে পারা মানুষ হাতে গুনা কয়েকজন। আজ মরলে কাল দু’দিন কি দরকার লক্ষ লক্ষ টাকার সঞ্চয়, সম্পদ এসব কিছু মৃত্যুর পর সঙ্গে নেয়া যাবে না। বার্ধক্য যখন আসে, যখন চলাফেরা করতে অক্ষম, তখন আপন সন্তানরা স্বীয় পিতাকে উচ্ছিষ্ট (রাবিশ) পদার্থ রূপে গণ্য করে ধানমন্ডীতে গড়া আলিসান ভবনটা দখল নিয়ে বৃদ্ধ বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে ব্যবস্থা করে কি দুঃখজনক পরিনতি। তাই বলছি দেশকে ভাল বাসুন। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। দুর্নীতি করার হীন অভ্যাস পরিহার করুন। ইহলোক ও পরলোকে সুখী হতে পারবেন। স্কন্দে বিদ্যমান ক্যারমিন কাতেবিন নিত্য দিনের ব্যালেন্সশীটে আপনার ভাল মন্দের আমলনামা সবকিছুই লিপিবদ্ধ করে যাচ্ছে। আপনার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ শেষ বিচারের দিনে আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে।
সবর এবং শোকর গুজার করার মাধ্যমে আল্লাহপাকের আনুকূল্যতা লাভ করা যায়। বর্তমান প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আমাদের সবার উচিত সবর (ধৈর্য্য) করা এবং আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিটি নেয়ামতের জন্য শোকর করা, নিশ্চয় মহান আল্লাহ সবর এবং শোকরকারীদে পাশে আছেন। সবর করার অর্থ দুর্বলতা প্রকাশ নয়। শোকর মানে আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। সবর অনুশীলন না করাতে আজ মানুষে মানুষে হানাহানি, মারামারি। অদৃষ্টের ভালমন্দের প্রতি বিশ্বাস হীনতা জন্য লোভ লালসার উদ্ভব হয়। তাই এ জগতে হায় সে-ই বেশী চায় আছে যার ভুরি ভুরি। এ দু’টি বিষয় যদি নিয়ন্ত্রণ করা যেতো শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন সহজতর হতো। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে দেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন। জীবনের উৎকৃষ্ট সময়গুলো তিনি কারাবাস করে কাটিয়েছেন, শুধু স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। স্বাধীনতা আমাদের পরম প্রশান্তি। তাই তিনি বলেছেন স্বাধীনতা অর্জন যেমন কষ্টকর, স্বাধীনতা রক্ষা করা আরো, বেশী কষ্টকর। ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থ হানি করে স্বীয়ভোগ বিলাসে ব্যাস্ত থাকা স্বাধীনতা নয়। আপনার আয়ু সীমিত কিন্তু দেশ দীর্ঘদিন থাকবে। আমাদের উচিত হবে স্বীয় স্বার্থের চাইতে দেশের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া এবং দেশের স্বার্থকে কোন অবস্থাতে বিসর্জন না দেওয়া। দেশকে কোন অবস্থায় ছোট করার বদ অভ্যাস থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতেই হবে। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বের কারণে ৩৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে শুধু চীন থেকে। চীন আমাদের সক্ষমতার কথা বাচ-বিচার সাপেক্ষে বিনিয়োগে অর্থায়ন কয়েছে। তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্যতার প্রমান দিতে দুর্নীতির বিপক্ষেই অবস্থান নিতে হবে। আজ দক্ষিণ কোরিয়া মায়ানমারের অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং বিদ্যুৎ খাতের উৎপাদনের স্বল্পতার বিষয় আমলে নিয়ে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহশীল হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ে পোশাক শিল্পে চীনের শ্রম বাজারে মজুরী বৃদ্ধি পেয়ে ৩০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে আর ভিয়েত নামে ২০০ ডলার অথচ এর বিপরীতে বাংলাদেশে ১০০ ডলার। উৎপাদন ব্যয় স্বল্পতর হওয়ার কারণে বাংলাদেশের ইউরোপিয় এবং মার্কিন বাজার হস্তগত করার এই মোক্কম সময়টা কাজে লাগাবার ব্যবস্থা যদি করা যায় তবে চলমান সংকট কাটিয়ে ওঠা দূরহ কোন ব্যাপার নয়। তবে একটু সবর (ধৈর্য্য) করতে হবে আর কি? আমাদের জনসংখ্যাকে সমস্যারূপে চিহ্নিত করে নয় জনসংখ্যাকে দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করতে পারলে আমাদের কোন সমস্যা বিদ্যমান থাকবে না বিদেশে চাকুরীরত যারা এ দুর্দিনে ও প্রিয় মাতৃভূমির জন্য যথেষ্ট রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে এটা দেশপ্রেমের উজ্জল দৃষ্টান্ত। যে জাতি নিজেকে নিজে সাহায্য করে আল্লাহ তাদের পশ্চাতে থাকে। যে জাতি দুর্নীতি করে আল্লাহ তাদের প্রতি রহমত ও বরকত উঠিয়ে ফেলবে। তাদের ওপর গজব নাজেল হবে, করোনা এখন একটি উদাহরণ। ডিপুটি স্পিকার মহোদয়ের তাওবার পর আমাদের যেন বোধোদয় হয়। আল্লাহর দৃষ্টিতে আমরা অনেক পাপ করেছি আমাদের মধ্যে যেন আত্মশুদ্ধির প্রবণতা সৃষ্টি হয় এই প্রত্যাশা করছি।

লেখক : কলামিস্ট