এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। এই হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৩০ হাজার ৩০৪ জন। গতবছর মাধ্যমিক স্তরের এই সমাপনী পরীক্ষায় ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রবিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবারের মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করেন। এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তন থেকে ফেইসবুক লাইভে মাধ্যমিকের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।
এবার ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে। নয়টি সাধারণ বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডের ৭১ দশমিক ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। খবর বিডিনিউজের
এবার পাসের হার এবং জিপিএ-৫- দুদিক দিয়েই সংখ্যায় এগিয়ে আছে মেয়েরা। ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ পাস করেছে।
মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১০ লাখ ২১ হাজার ৪৯০ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯২ জন। আর ১০ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩১ জন। পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৫ হাজার ৭৫৪ জন ছাত্র এবং ৭০ হাজার ১৪৪ জন ছাত্রী।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করা হয়েছে বলে ফল প্রকাশের দিন কোনো অবস্থাতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমায়েত না হতে শিক্ষার্থীদের আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়। ফলে স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উদযাপনের চিরাচরিত দৃশ্য এবার দেখা গেল না। এবার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ফল পাঠানো হয়নি। তাই ফল প্রকাশের দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিসও বন্ধ রাখতে বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মোবাইলে ফল : অন্য বছরের মতো এবারও যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানা যাবে। তবে ফল পেতে যারা প্রি-রেজিস্ট্রেশন করেছেন ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তারা এসএমএসে ফল পেয়ে যাবেন। ফল প্রকাশের পরেও যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে ফল পাওয়া যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জানিয়েছেন।
এসএসসির ফল জানতে ঝঝঈ লিখে একটি স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২০ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানা যাবে। দাখিলের ফল পেতে উধশযরষ লিখে একটি স্পেস দিয়ে গধফ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২০ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
আর কারিগরি বোর্ডের এসএসসির ফল পেতে ঝঝঈ লিখে একটি স্পেস দিয়ে ঞবপ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২০ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফল জানানো হবে। মোবাইলে এসএমএসের পাশাপাশি নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকেও ফল জানা যাবে।
এছাড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) ই-মেইলে কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের ফল পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে ডিসি ও ইউএনও’র অফিস থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।
পাসের হার ও জিপিএ, মেয়েরা এগিয়ে দুদিকেই : এসএসসিতে এবারও পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রদের পেছনে ফেলেছে ছাত্রীরা; জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যাতেও মেয়েরাই এগিয়ে রয়েছে।
নয় বোর্ড থেকে এবার ৭ লাখ ৯০ হাজার ৩৩৫ জন ছাত্র মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাস করেছে ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৬২১ জন। পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
অন্যদিকে ৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৭৪ জন ছাত্রী এবার এসএসসি দিয়েছিল। তাদের মধ্যে ৭ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। পাসের হার ৮৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। সেই হিসেবে এবার ছাত্রদের থেকে ছাত্রীদের পাসের হার বেশি।
গত তিন বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। আর এবার পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৫ হাজার ৭৫৪ জন ছাত্র এবং ৭০ হাজার ১৪৪ জন ছাত্রী।
এবার বিজ্ঞান বিভাগের ৯৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ, মানবিকের ৭৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষার ৮৪ দশমিক ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।