মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কারণে বাংলাদেশ হবে এশিয়ার গেইটওয়ে

4

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ বাংলাদেশকে একটি অর্থনৈতিক হাবে পরিণত করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জেটরো কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি অ্যান্ডো। গতকাল বুধবার বিকালে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেটরো) এবং জাপান কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন ইন ঢাকা (জেসিআইএডি)’র মধ্যে বিজনেস টু বিজনেস মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। ফলে জাপান এখন বাংলাদেশের অন্যতম কৌশলগত অংশীদার। এর ভিত্তিতে জাপান ফ্রি এন্ড ইন্দো প্যাসিফিকের অংশ হিসেবে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করছে যা বাংলাদেশকে একটি অর্থনৈতিক হাবে পরিণত করবে। ফলে বাংলাদেশ সাউথ এশিয়ার গেইটওয়ে পরিণত হবে।
ইউজি অ্যান্ডো (আনন্দ) বলেন, জাপানি ব্যবসায়ীরা সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে তাদের বিনিয়োগ করেন। এখনো জাপানি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের জন্য চট্টগ্রামকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই চট্টগ্রামে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে জাপান কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন’র ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রামে এসেছে। ফলে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো গভীর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার পর জাপান বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও লজিস্টিক সেক্টরে অবকাঠামো উন্নয়নসহ কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়, যা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন জাপানি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা জাপানের সাথে যৌথ ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আগ্রহী। এ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে চিটাগাং চেম্বার জেটরো এবং জেবিসিসিআই’র সাথে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে জাপান ডেস্ক চালু করেছে।
জেসিআইএডি’র (শুকোকাই) এবং জেবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মাইয়াংহো লী বলেন, জাপানের স্বনামধন্য ১৬টি কোম্পানির মধ্যে মিতসুবিশি কর্পোরেশন, ফার্স্ট রিটেলিং (ইউনিকলো), ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গেøাবাল, তেইজিং ফ্রন্টিয়ার কোম্পানি, ইউসেন লজিস্টিকস (বাংলাদেশ) লি., আলসক বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ সার্ভিস লি., সেটশোইউ এস্টেক কর্পোরেশন, টিএনওয়াই লিগ্যাল বাংলাদেশ লি., কেটু লজিস্টিকস বাংলাদেশ লি., এমইউএফজি ব্যাংক লি. (মিতসুবিশি গ্রুপ), মামিয়া-ওপি-সহ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম সফর করছেন। ভৌগোলিক সুবিধার কারণে চট্টগ্রামে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী জাপানি বিনিয়োগকারীরা।
তিনি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে এ ধরনের বিটুবি আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে উল্লেখ করেন।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, চিটাগাং চেম্বার দেশে তথা চট্টগ্রামে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। জাপান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিটুবি আলোচনা বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এসময় চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, চেম্বার পরিচালক মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর দাশ, বেনাজির চৌধুরী নিশান, মো. শাহরিয়ার জাহান, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সাকিফ আহমেদ সালাম, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম) অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক এস. এম. আবু তৈয়ব, মাহফুজুল হক শাহ ও কামাল মোস্তফা চৌধুরী, রিলায়েন্স শিপিং এন্ড লজিস্টিক লি.’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ, প্রান্তিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম সারওয়ার, পিএইচপি মোটরস’র এমডি এবং চট্টগ্রামের মালয়েশিয়ান অনারারী কনসাল মো. আক্তার পারভেজ, রিলায়েন্স এসেট্স্ এন্ড ডেভেলাপমেন্টস (বিডি) লি.’র পরিচালক ওমর মুক্তাদিরসহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।