মাটির নিচে নেওয়া হবে বিদ্যুতের তার

48

 

 

নগরজুড়ে যত্রতত্র বৈদ্যুতিক তারের জটলা। ঘূর্ণিঝড় বা বাতাসে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণও গেছে বহুজনের। ভয়াবহ আগুন লাগার কারণও এলোমেলোভাবে ঝুলে থাকা তার। অবশেষে এসব তার মাটির নিচে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, নগরে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যতগুলো অগ্নিকান্ড ঘটেছে, তার বেশিরভাগই বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ৫৯৮টি অগ্নিকান্ডের মধ্যে ২০৬টি ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে। অগ্নিকান্ডে ওই বছর মারা গেছে ১০ জন। নষ্ট হয় ৪০ কোটি টাকার সম্পদ। ২০১৬ সালের ৫০০টির মতো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।

২০১৭ সালে সাড়ে ৪শ’ ও ২০১৮ সালে ৪শ’টির মতো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি ঘটেছে বিদ্যুতের তারের কারণে। তাই মাটির নিচে বিদ্যুতের তার নেওয়া হলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানান নগর পরিকল্পনাবিদরা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এমন উদ্যোগে খুশি নগরবাসীও। খবর বাংলানিউজের
নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, মাটির নিচে লাইন নিতে গিয়ে যদি দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে, তাহলে আমি সেই সিদ্ধান্তকে ‘না’ জানাবো। যদি সবদিক দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, অবশ্যই এটি একটি ভালো উদ্যোগ। মাটির নিচে তার নেওয়া হলে অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রমতে, বৈদ্যুতিক তার মাটির নিচে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি অনেক আগের। চলতি বছর ঢাকায় কয়েকটি বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটার পর, ঝুলে থাকা এসব তার সরানোর নির্দেশনা দেয় আদালত। পরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সব তারই মাটির নিচে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলও মাটির নিচে তার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম শহরে ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাটির নিচে নেওয়া হবে বৈদ্যুতিক তার। পরে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা শহর ও উপজেলা শহরেও মাটির নিচে নেওয়া হবে তার। এ জন্য চলতি মাসেই দরপত্র আহবান করা হবে।
চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিতরণ) দক্ষিণাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, ‘বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই প্রকল্পের মধ্যে মাটির নিচে তার নেওয়ার প্রকল্পও আছে। চলতি মাসেই দরপত্র আহবান করা হবে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরেই মাটির নিচে তার নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই মাটির নিচে তার নেওয়া হবে।’ ৬০ বর্গমাইলের চট্টগ্রাম নগরে পিডিবির তিন হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে।