মাংস উদ্বৃত্ত থাকার পরও আমদানি কেন : হাইকোর্ট

34

গবাদিপশুর মাংস উদ্বৃত্ত থাকার পরও তা বিদেশ থেকে আমদানিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তকে কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। সেসঙ্গে গবাদিপশুর মাংসের মান ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ রুল জারি করে। বাণিজ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, ধর্ম সচিব, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. কামরুজ্জামান ও নাজমুল হুদা; রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
কামরুজ্জামান বলেন, ‘দেশে গবাদিপশুর যে পরিমাণ মাংস উৎপাদন হচ্ছে তাতে চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকছে। এ পর্যায়ে বিদেশ থেকে মাংস আমদানির সিদ্ধান্ত হলে তা হবে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’। এবিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাংস আমদানির সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমের খবরে এসেছে। এ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে কিনা তা আমরা জানি না। তবে আশঙ্কা করছি, সরকার এ ধরনের চুক্তি করতে যাচ্ছে। সে আশঙ্কা থেকেই রিট আবেদনটি করা হয়েছিল’। খবর বিডিনিউজের
গত ১০ সেপ্টেম্বর একটি ইংরেজি দৈনিকের খবর উদ্বৃত করে রিট আবেদনে বলা হয়, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ সফর শেষে দেশে ফিরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত ২৮ আগস্ট সচিবালয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন, সরকার লাতিন আমেরিকার চারটি দেশের সাথে উন্মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা করছে। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে গরুর মাংস রপ্তানি করতে চায়।
৯ সেপ্টেম্বর অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এএইচসিএবি) সংবাদ সম্মেলন করে গবাদিপশুর মাংস আমদানির পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য তুলে ধরে সংগঠনটি বলে, দেশে গবাদিপশুর মাংসের চাহিদা ৭২ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিক টন, সেখানে উৎপাদন হয় ৭৫ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত থাকার পরও বিদেশ থেকে মাংস আমদানির সিদ্ধান্ত অর্থনীতিতে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এখন ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশ থেকে বাংলাদেশে হিমায়িত মাংস আমদানি হচ্ছে।