মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের হাতে ট্রাফিক সার্জেন্ট লাঞ্ছিত

51

কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেকে ট্রাফিক সার্জেন্টকে লাঞ্ছিত করেছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। কর্ণফুলী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামীর মোটরসাইকেলের মূল কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ১০ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ তুলে সার্জেন্টকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর লোকজন সার্জেন্টকে একটি পেট্রোল পাম্পে নিয়ে ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বলে জানা গেছে।
গতকাল বিকাল ৩টায় মইজ্জ্যারটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে কর্ণফুলী থানার ওসি, কর্ণফুলী জোনের এসি ও ট্রাফিক পরিদর্শক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বামীর সাথে মোটরসাইকেলযোগে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম বাড়ি ফিরছিলেন। মইজ্জ্যারটেক এলাকায় সার্জেন্ট মোহাম্মদ মোস্তাফিজ তাদের গতিরোধ করেন। এ সময় গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাইলে ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী ফটোকপি দেখান। কিন্তু তাতে সার্জেন্টের সন্দেহ হলে মূল কাগজ আনার পর গাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে লাঞ্ছিত হন সার্জেন্ট মোস্তাফিজ। ওই সময় লোকজন সার্জেন্টকে একটি পেট্রোল পাম্পে নিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে কর্ণফুলী থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহেদুল ইসলামসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সার্জেন্টকে উদ্ধার করেন। পরে কর্ণফুলী জোনের টিআই মামুন, ওসি ও জোনের এসিসহ ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়।
ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম বলেন, মোটরসাইকেলের কাগজপত্রের ফটোকপি দেখানোর পর সার্জেন্ট মোটরসাইকেল আটকে রাখে। মূল কপি বাড়িতে আছে বলে জানানো হয়। ওই সময় পরিচয় দেয়ার পরও সার্জেন্ট ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। এর প্রতিবাদ করায় তর্কাতর্কি হয়। ওই সময় আশপাশ থেকে লোকজন সার্জেন্টকে একটি পেট্রোল পাম্পে অবরুদ্ধ করে রাখে। ২ ঘণ্টা পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন অফিসারদের মধ্যস্ততায় সমঝোতা হয়।
ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মোহাম্মদ মামুন জনান, মোটরসাইকেলে কাগজপত্র না থাকলে নিয়ম মোতাবেক গাড়ি জব্দ করার বিধান আছে। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান কোন ধরনের কাগজপত্র দেখানোর বদলে সার্জেটের উপর চড়াও হয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে কর্ণফুলী জোনের এসির দপ্তরে প্রাথমিক আলোচনা হয়। এরপর গাড়ির কাগজপত্র দেখানোর পর গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়। অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে রাতে থানায় পুনরায় বৈঠক হবে। সেখানে বিকালের ঘটনায় আইনগত কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান নারী হওয়ায় রাস্তার উপর ঘটনা যাতে না বাড়ে সেদিকে নজর রাখা হয়েছিল।
মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহেদুল ইসলাম, কর্ণফুলীর থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ, টিআই মামুন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বানাজাকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। সেখানে একটি সমঝোতা হয়।
সার্জেন্ট কর্তৃক ১০ হাজার টাকা দাবির বিষয়টি সত্য নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ফটোকপির কারণে সার্জেন্টের সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু ঘটনা যেটা ঘটেছে, সেটা কাম্য ছিলো না।
এ বিষয়ে কথা বলতে কর্ণফুলী থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ ও ওসি (তদন্ত) সৈয়দ জোবারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয় কিন্তু তারা রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।