মহাকাশে ঘটা প্রথম ‘অপরাধের’ অভিযোগ তদন্ত করছে নাসা

13

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা সম্ভবত মহাকাশে ঘটে যাওয়া প্রথম অপরাধের এক অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, একজন নভোচারী মহাশূন্য থেকে পৃথিবীতে তার এক সাবেক জীবনসঙ্গীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেআইনিভাবে ঢুকে পড়েছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা খবর দিচ্ছে, মহাকাশচারী অ্যানি ম্যাক্লেইন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে ঐ অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা স্বীকার করেন কিন্তু দাবি করেন যে এর মাধ্যমে কোনো আইন ভঙ্গ হয়নি। তার জীবনসঙ্গী সামার ওর্ডেন মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশনের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। এই ঘটনার পর মিজ ম্যাক্লেইন পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন।
তার আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে তিনি মহাকাশ থেকে সামার ওয়ার্ডেনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখতে চেয়েছেন যে সেখানে সংসার এবং তাদের সন্তানের পেছনে খরচের জন্য যথেষ্ট টাকাপয়সা রয়েছে কী না।
মিজ ম্যাক্লেইন এবং মার্কিন বিমান বাহিনী গোয়েন্দা কর্মকর্তা মিজ ওয়ার্ডেন লেসবিয়ান দম্পতি। তারা ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। কিন্তু ২০১৮ সালে মিজ ওয়ার্ডেন বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। খবর বিবিসি বাংলার
বেআইনিভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখার অভিযোগ দায়েরের পর নাসার তদন্ত বিভাগ দু’জনের সাথেই যোগাযোগ করেছে।
অ্যানি ম্যাক্লেইন মার্কিন সামরিক অ্যাকাডেমি ওয়েস্ট পয়েন্ট-এর গ্র্যাজয়েট। পাস করার পর সেনাবাহিনীর পাইলট হিসেবে তিনি ইরাকে ৮০০ ঘণ্টা যুদ্ধকালীন দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি টেস্ট পাইলট হন এবং ২০১৩ সালে তিনি নাসার পাইলট পদের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ছয়মাস আইএসএস-এ অবস্থান করেন।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস-এর মালিকানা পাঁচটি দেশের-যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপ, জাপান এবং ক্যানাডা।
মহাশূন্যে যে কোন মহাকাশচারী এবং যন্ত্রপাতির ওপর এই দেশগুলোর নিজস্ব আইন কার্যকর হবে বলে আইনি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং কোনো ক্যানাডিয়ান নাগরিক যদি মহাকাশে গিয়ে কোন অপরাধ ঘটান, তাহলে তিনি ক্যানাডিয়ান ফৌজদারি আইনের আওতায় পড়বেন। একইভাবে রুশ নভোচারীরা রাশিয়ার আইনের অধীন থাকবেন।
মহাকাশে ইউরোপকে একটি দেশ হিসেবে দেখা হয়। সেখানে ইউরোপীয় আইন বলবৎ থাকবে। তবে চাইলে ইউরোপের কোনো দেশ তার জাতীয় আইন প্রয়োগ করতে পারবে বলে বিধান রয়েছে। মহাকাশ থেকে অপরাধী প্রত্যর্পণের বিধানও রয়েছে। অপর কোনো দেশের নাগরিক মহাশূন্যে অপরাধ করলে দ্বিতীয় কোনো দেশ তাকে ফেরত চাইতে পারবে।
মহাশূন্যে ট্যুরিজমের সম্ভাবনা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। মহাকাশে ঘটা অপরাধের বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও তাই বাড়ছে।