মসজিদ নির্মাণের নামে সরকারি জায়গা দখল করা যাবে না

34

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, অনুমতি ছাড়া নগরীতে সরকারি জায়গা-জমি দখল করে ইদানীং যেখানে সেখানে মসজিদ নির্মাণের একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করার হীনমানসিকতায় মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে স্থাপনা গড়ে তোলা আইনত অপরাধ। এ ধরনের অবৈধ স্থাপনা অপসারণে উদ্যোগ নেয়া হলে, ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসে কুচক্রীমহল। তাই আলেম-ওলামাদের খেয়াল রাখতে হবে কোন মহল ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে যাতে দেশে অস্থীতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে। মসজিদের জায়গা ওয়াক্ফ এস্টেটের অধীনে থাকা সরকারি নিয়ম।
নগরীর আলেম-ওলেমাদের একটি প্রতিনিধি দল কর্পোরেশনের টাইগারপাসস্থ অস্থায়ী অফিসে প্রশাসকের সাথে গতকাল বুধবার সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রশাসক নগরীর শেরশাহ এলাকায় ড্রেনের ওপর নির্মিত মসজিদ ভাঙার বিষয়ে পরামর্শ চাইলে আলেমগণ বলেন, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি জায়গায় মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করে তা অপরাধ। ইসলাম এ ধরনের অপরাধকে কখনো অনুমোদন করে না। মসজিদ মাদ্রাসার স্থান অবশ্যই ওয়াক্ফ হতে হবে। সরকারি বা সিটি কর্পোরেশনের জায়গা-নালা দখল করে পিসি রোড ও শেরশাহে যে মাজার নির্মাণ করা হচ্ছে তা ঠিক নয় বলে ওলোমারা উল্লেখ করেন। এধরনের কর্মকান্ড ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী। জনস্বার্থে এধরনের স্থাপনা অপসারণ করা উচিত বলে তারা অভিমত দেন।
প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আলেম-ওলামারা হলেন আমাদের মাথার তাজ। চট্টগ্রামবাসী ধার্মিক ও উদার মনোভাব নিয়ে চলে। এই নগরে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। এই অঞ্চলে ধর্মীয় উগ্রবাদের কোন স্থান নাই। কোন ভুলবুঝাবুঝি হলে তা পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ আছে।
এ সময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, আলেম- আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ অছিয়র রহমান, কাজী মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ, আল্লামা আবদুল আজিজ আনোয়ারী, আল্লামা মোহাম্মদ বদিউল আলম রেজভী, আল্লামা মোহাম্মদ সৈয়দ আবু নোমান, আল্লামা জামালউদ্দীন, আল্লামা মোহাম্মদ ফোরকানুল্লা খলিল, আমিনুল ইসলাম, চসিকের মাদ্রাসা পরিদর্শক হারুনুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে পুরনো নগরভবনে প্রশাসকের অস্থায়ী দপ্তরে নগরবাসীর সাথে গণসাক্ষাতকার প্রদান করেন প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
এ সময় তিনি বকেয়া পাওনা টাকা পরিশোধে বিলম্ব হলেও উন্নয়ন কাজ সচল রাখার জন্য ঠিকাদারদের প্রতি আহŸান জানান। তিনি বলেন, কর্পোরেশনের এক হাজার দুইশ কোটি টাকা দেনার মধ্যে ঠিকাদারদের পাওনা ৮শ ৫৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ১৭ কোটি টাকা।
গতকাল ৩০ জন নগরবাসী প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতপ্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন কর্পোরেশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার। এছাড়াও রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, গৃহিনী এবং চসিকের অবসরে যাওয়া শিক্ষকের সন্তান।