মসজিদ ছাড়িয়ে তপ্ত সড়কেও নামাজ আদায়

52

সাড়ে তিনশ’ বছরের প্রাচীন আন্দরকিল্লার শাহী জামে মসজিদে পবিত্র জুমাতুল বিদায় দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন মুসল্লিরা। বাবার হাত শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে ছেলের কাঁধে ভর দিয়ে আসেন অশীতিপর বৃদ্ধও। মসজিদের ভেতর ও মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেকে তপ্ত সড়কেও নামাজ আদায় করেন। বাসা-বাড়ি থেকে আসার পথে বেশিরভাগ মুসল্লি জায়নামাজ সঙ্গে আনলেও পথচারী এবং নগরে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মুসল্লিরা ১০ টাকায় ‘ওয়ানটাইম জায়নামাজ’ কিনে নামাজ আদায় করেন। কাগজের পাইকারি বাজার আন্দরকিল্লার অনেকে রিম হিসেবে ক্র্যাফট পেপার কিনে প্রতিটি মুসল্লিদের কাছে বিক্রি করেন ১০ টাকায়। এ ছাড়া অনেকে ব্যানার, পোস্টার, এক পিঠ ছাপানো আর্ট কার্ড দেন মুসল্লিদের। বিপুলসংখ্যক মুসল্লির ওজুর জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বেশ কিছু রিকশাভ্যান ছিল সড়কে।-খবর বাংলানিউজের
খুতবায় রমজানের তাৎপর্য, শবে কদর, জাকাত, ফিতরা, তাওবা, রমজানের বিদায়লগ্নে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে কোরআন-হাদিসের আলোকে আলোচনা করেন খতিব আল্লামা সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরি আল মাদানি।
জানা গেছে, ১৬৬৭ খ্রিষ্টাব্দে মোগল সেনাপতি সুবেদার শায়েস্তা খাঁর ছেলে বুজুর্গ উমেদ খাঁ শাহী জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৬১-১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ৯৪ বছর ব্রিটিশ শাসকরা মসজিদটিকে গোলাবারুদের গুদাম বানিয়ে রেখেছিল। এরপর চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মসজিদটি পুনরুদ্ধার করে।
আন্দরকিল্লা সড়কের ওপর জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করে শিশুরাও। পূর্ব মাদারবাড়ি থেকে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন আনোয়ারুল ইসলাম। মসজিদ কমপ্লেক্সে জায়গা না পেয়ে সড়কে নামাজ আদায় করেন তিনি।
আনোয়ার বলেন, আলেমদের মুখে শুনেছি যেখানে বেশি মুসল্লি সেখানে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। তাই প্রতিবছর শাহী জামে মসজিদে জুমাতুল বিদা পড়তে ছুটে আসি। গরমে কষ্ট হলেও মনে অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করি।
শুধু আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ নয়, নগর ও জেলার প্রতিটি মসজিদে জুমাতুল বিদায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। জমিয়তুল ফালাহ, আমানত খান (র.) দরগাহ মসজিদ, সিডিএ কলোনি জামে মসজিদ, গরিবুল্লাহ শাহ (র.) দরগাহ মসজিদ, মিছকিন শাহ (র.) দরগাহ মসজিদ, হাফেজ মুনির উদ্দিন (র.) দরগাহ মসজিদ, মাইজভান্ডার শরিফ, আনোয়ারার মোহছেন আউলিয়া (র.) দরগাহ মসজিদে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসেন জুমাতুল বিদার নামাজ আদায়ে। প্রতিটি মসজিদে মুসলিম উম্মাহ, দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়।