মরা গাঙে আর জোয়ার আসে না

19

বিএনপি জনসমর্থন হারিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে আজকে জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। তাদের আন্দোলনের ডাকে জনগণ সাড়া দেয় না। বিএনপির আন্দোলনে মরা গাঙে জোয়ার আর আসে না।
গতকাল রোববার দুপুরে বরিশাল নগরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ। এখন তারা শুধু নালিশ করে বেড়ায়, তাদের অপর নাম নালিশ দল। নয়াপল্টনে তাদের এক আবাসিক প্রতিনিধি রয়েছে, যিনি সেখানে বসে বসে প্রেস ব্রিফিং করেন আর গলাবাজি করেন।
তিনি বলেন, বরিশালে কী দিয়েছে বিএনপি? একটা রাস্তা, একটা ব্রিজ; কিছুই করেনি, কোথাও কোনো উন্নয়ন নেই। বিএনপির আছে সন্ত্রাস, দিয়েছে দুর্নীতি, লুটপাট আর হাওয়া ভবন। হাওয়া ভবন মানে খাওয়া ভবন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কোন হাওয়া ভবন নেই। খবর বাংলানিউজের
বিএনপির সময়ে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, আর সেই বিএনপি যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, তখন ভূতের মুখে রাম রাম ধ্বনির মতো শোনায়। বর্তমান সরকার দুর্নীতি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, বরিশালে বিএনপির নেতা আছেন। দুই বছরে দুই মিনিটও একটা আন্দোলন করতে পেরেছেন তারা? কিন্তু এখন দেশ ছেড়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে তারা, কথায় কথায় নালিশ। এজন্য বলি এটা এখন বাংলাদেশের নালিশ পার্টি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, টেমস নদীর ওপার থেকে অর্ডার দেন, আর পুতুল ফকরুল নাচে। যেমনি অর্ডার আসে ফকরুলও তেমনি নাচে। কিন্তু কোনো রেজাল্ট নেই, আন্দোলন করে সরকার হঁটাবে কিন্তু আপনাদের নিজেদের অস্তিত্ব কোথায়?
‘উইকেট দু’টি চলে গেছে। লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবের উইকেটের পতন, তারপর মোর্শেদ খান, আপনাদের (বিএনপি) সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী-বড় উইকেট, এটাও গেছে। আরো উইকেট যাবে, যার অপেক্ষায় রয়েছে দেশের মানুষ।
বিএনপির নেতৃত্ব এখন অস্তিত্বের সংকটে আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতির জন্য এদেশে মুসলীম লীগের পরিণতি ভোগ করবে। কাজেই বিএনপিকে নিয়ে বিচলিত হবেন না, আপনারা (আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী) ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখবেন।
সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বরিশাল একটি ডিভিশনাল হেডকোয়ার্টার। এখানে অবশ্যই ফোরলেন যুক্ত হবে, বরিশাল থেকে ফরিদপুর এডিবির অর্থায়নে আমরা ফোর লেন করবো। বরিশাল-ভোলা সেতু নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ আমরা শেষ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, বরিশালের রাস্তাঘাটসহ কোনো সড়ক, সেতু এবং যোগাযোগের অন্য কোনো ঘাটতি যেন না থাকে। শেখ হাসিনা তাকলে আপনারা সব পাবেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহব্বায়ক গোলাম আব্বাছ চৌধুরী দুলাল। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটর আহব্বায়ক (মন্ত্রী) আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্মেলনস্থলে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।