মদিনা সনদ

750

মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) ১ম হিজরী সাল, খ্রিষ্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন। যাকে বলা হয় ‘মদীনার সনদ’ এ সনদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্ম, সম্প্রদায় ও গোত্রের সমন্বয়ের গঠিত একটি রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের সমমর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে। এ সনদের মধ্য দিয়ে মদীনায় বসবাসরত মুসলিম ইহুদী, পৌত্তলিক ও অন্যান্য ধমীর্য় সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক অঙ্গীকারনামা হিসেবে প্রণয়ন করা হয়। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের নাগরিকগণ রক্তদানসহ ত্যাগ করেছে। সবদিক বিবেচনায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মদিনার সনদকে সামনে রেখে সকল নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার নাগরিক হিসেবে সকলের সমমর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের জাতীয় সংবিধানে মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা’র আদর্শটি স্থাপন করা হয়েছে। যা মদিনা সনদের উজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত। মদিনার সনদের শুরুর মতই বাংলাদেশের সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পবিত্র কুরআনের এ আয়াতটি সংরক্ষিত রয়েছে। নবীজীর মদিনার সনদের ২৯নং ধারায় সকলের নিজ নিজ ধর্ম প্রতিপালনের পূর্ণ স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ (১) (ক) ধারাতেও সকল ধর্মাবলম্বীর নিজ নিজ ধর্ম পালনের মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। বিশ্বের সকল মানুষের মুক্তির কান্ডারী মহানবী (সা.) ছিলেন মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ আমানদার, বিশ্বাসী ও ন্যায় পরায়ণ। তাঁর এই সনদের মাধ্যমেই ইসলাম সকল ধর্মের মানুষের কাছে প্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি লাভ করে। এর ফলে বিশ্বব্যাপি পবিত্র দ্বীন ইসলামের দাওয়াতের পথও উন্মুক্ত হয়। মদিনা সনদে তৎকালিন মদিনায় বসবাসরত সকল ধর্মের নাগরিকের নিজ নিজ ধর্মীয় অধিকার যে উদার দৃষ্টিভঙ্গিতে সংরক্ষণ ও লালন করা হয়েছিলো, তেমনি বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাদেশের সকল ধর্মের নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার লালন ও সংরক্ষণ করা হয়- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ করেননি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাতে কোন মহল বাংলাদেশের কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করে, সে লক্ষ্যে মদিনা সনদ এর ৬১টি ধারা বাংলায় উপস্থাপন করা হলো যা সীরাতের আদি গ্রন্থ ‘সীরাতে ইবনে হিশাম’ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত) থেকে মদিনা সনদের মূল আরবী ভাষ্যটির হুবহু থেকে সংগৃহীত হয়েছে।
ধারা-১ : ইহা মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পক্ষ থেকে লিখিত অঙ্গীকারনামা।
ধারা-২ : কুরাইশ ও ইয়াবরেব এর মু’মিন-মুসলিমগণ ও যারা তাদের অনুগামী হয়ে তাদের সাথে যুক্ত হবে এবং তাদের সাথে মিলে জিহাদ করবে তাদের মধ্যে (এই চুক্তিপত্র সম্পাদিত)।
ধারা-৩ : তারা অন্যদের থেকে ভিন্ন একটি জাতি।
ধারা-৪ : কুরাইশদের মধ্য থেকে যারা মুহাজির তারা তাদের পূর্বাবস্থায় বহাল থাকবে তাদের পূর্বেকার রক্তপর্ন লেনদেন করবে এবং স্বেচ্ছামূলকদানে তাদের বন্দী-মুক্তিপণ পরিশোধ করবে। তারা মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-৫ : এবং বনূ ‘আওফ তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-৬ : এবং বণু হারেস (ইবনুল খাযরাজ) তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-৭ : বনূ সা’য়েদাহ তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-৮ : এবং বনূ জুশাম তাদের মধ্যে বিদ্যমান এবং রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-৯ : এবং বনূ নাজ্জার তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-১০ : এবং বনূ ‘আমর ইবন ‘আওফ তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-১১ : এবং বনূ নাবীত তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-১২ : এবং বনূ ‘আওস তাদের মধ্যে বিদ্যমান পূর্ব রক্তপণ আদায় করবে এবং সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ বন্দীদের মুক্তিপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করবে এবং মু’মিনদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে।
ধারা-১৩ : এবং মু’মিনগণ তাদের কাউকে দায়গ্রস্ত ফেলে রাখবে না বরং তাদের মুক্তিপণ বা রক্তপণ স্বেচ্ছাদানে আদায় করে দেবে।
ধারা-১৪ : এবং কোন মু’মিন অন্য মু’মিনের অনুমতি ছাড়া তার বন্ধুর সাথে মিত্রতা করবে না।
ধারা-১৫ : মু’মিন মুত্তাকীদের কারও ওপর কোন সন্ত্রাসী হামলা হলে অথবা জুলুমরে থাবা বিস্তার করতে চাইলে অথবা কোন অন্যায় বা সীমা লংঘন করতে চাইলে অথবা মু’মিনদের মধ্যে বিপর্যয়-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে সকলের সম্মিলিত হাত ওই অপরাধীর ওপর নিপতিত হবে, চাই সে কারও সন্তানই হোক।
ধারা-১৬ : কোন মু’মিন কোন কাফিরের পক্ষ নিয়ে অন্য মু’মিনকে হত্যা করবে না এবং কোন মু’মিনের বিপক্ষে কোন কাফেরকে সাহায্য করবে না।
ধারা-১৭ : নিশ্চয়ই আল্লাহর জিম্মাদারী সকলের জন্য একই, তাদের পক্ষে একজন সাধারণ লোকও আশ্রয় দিতে পারবে।
ধারা-১৮ : নিশ্চয়ই মু’মিনগণ স্বতন্ত্রভাবে পরস্পরের মিত্র।
ধারা-১৯ : এবং ইহুদীদের মধ্যে যারা আমাদের অনুগামী হবে তাদের জন্য সাহায্য ও মর্যাদার অধিকার থাকবে। তাদের প্রতি কোন অবিচার করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করা হবে না।
ধারা-২০ : মু’মিনগণ প্রদত্ত শান্তি-নিরাপত্তা হবে অভিন্ন, আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের সময় এক মু’মিনকে ছেড়ে অন্য মু’মিন নিরাপত্তা চুক্তি করতে পারবে না বরং পারস্পরিক সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক চুক্তিই গৃহীত হবে।
ধারা-২১ : এবং যে সকল সম্প্রদায় আমাদের সাথে যুদ্ধ করবে তারা একের পর আরেক দল এসে দায়িত্ব পালন করবে।
ধারা-২২ : এবং আল্লাহর রাস্তায় রক্তপাতের আশঙ্কা দেখা দিলে মু’মুনিগণ একে অন্যের পক্ষে তা প্রতিহত করবে।
ধারা-২৩ : এবং নিশ্চয়ই ধর্মনিষ্ঠ মু’মিনগণ উত্তম ও সুষ্ঠুতম হেদায়াতের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
ধারা-২৪ : কোন অংশীবাদী (মুশরেক) কুরাইশ-এর কোন সম্পদ ও জীবনের পক্ষে সাহায্য করতে পারবে না এবং কোন মু’মিনের বিপক্ষে তার অবস্থান গ্রহণ করতে পারবে না।
ধারা-২৫ : যদি কেউ গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া কোন মু’মিনকে হত্যা করেছে বলে প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। তবে যদি নিহতের অভিভাবক রক্তপণের বিনিময়ে গ্রহণ সম্মত হয় তাহলে সে তা পারবে। সকল মু’মিনকে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং ইহা কার্যকর করা ছাড়া তাদের জন্য অন্য কিছু বৈধ হবে না।
ধারা-২৬ : এবং কোন মু’মিন, যে এই চুক্তিপত্রে বিদ্যমান বিষয় স্বীকার করে নিয়েছে এবং আল্লাহ ও আখেরাতে ঈমান এনেছে, তার জন্য কোন চুক্তিভঙ্গকারীকে সাহায্য করা বা আশ্রয় দেওয়া বৈধ নয়। যে এমন কাউকেউ সাহায্য করবে অথবা আশ্রয় দেবে তার ওপর রোক কেয়ামতে আল্লাহর লা’নত ও ক্রোধ নিপতিত হবে। সেদিন তার কাছ থেকে কোন টাকা-পয়সা গ্রহণ করা হবে না।
ধারা-২৭ : কোন বিষয়ে তোমরা যখনই কোন মতানৈক্য উপনীত হবে তখন তা আল্লাহ ও মুহাম্মদ (সা) এর সমীপে সোপর্দ করতে হবে।
ধারা-২৮ : যুদ্ধ অবস্থায় ইহুদীরাও মু’মিনদের সাথে ব্যয়ভার বহন করবে।
ধারা-২৯ : বনূ ‘আওফ এর ইহুদীগণ মু’মিনদের সাথে একই জাতি হিসেবে গণ্য হবে: ইহুদীদের জন্য তাদের ধর্ম ও আর মুসলমানদের জন্য তাদের ধর্ম। তারা এবং তাদের মিত্রগণ অবস্থানে থাকবে। তবে যে জুলুম করবে এবং অপরাধে লিপ্ত হবে সে কেবল তাকে ও তার পরিজনদেরই ধ্বংস করবে।
ধারা-৩০ : এবং বনি নাজ্জার-এর ইহুদীগণ বনি ‘আওফের অনুরূপ অধিকার পাবে।
ধারা-৩১ : এবং বনি হারেস এর ইহুদীগণ বনি ‘আওফ এর ইহুদীদের অনুরূপ অধিকার পাবে।
ধারা-৩২ : এবং বনি সা’য়েদাহ এর ইহুদীগণ বনি ‘আওফ এর অনুরূপ অধিকার পাবে।
ধারা-৩৪ : বনি আওসের ইহুদীগণ, বনি আওফ এর অনুরূপ অধিকার পাবে।
ধারা-৩৫: বনি ছা’লাবাহ-এর ইহুদীগণ বনি ‘আওফ-এর ইহুদীদের অনুরূপ অধিকার পাবে। তবে যে ব্যক্তি কোন জুলুম ও অপরাধ করবে, সে বস্তুত নিজের ও নিজ পরিজনকেই ধ্বংস করবে।
ধারা-৩৬ : এবং ছা’লাবাহ্্ গোত্রের উপগোত্র জুফনা ছা’লাবাহ-এর মতই গণ্য হবে।
ধারা-৩৭ : বনি শুতাইবাহ্্ এর জন্য ‘আওফ-এর অনুরূপ অধিকার থাকবে। অবশ্যই অঙ্গীকার পূর্ণ করতে হবে, তা ভঙ্গ করা যাবে না।
ধারা-৩৮ : এবং ছা’লাবাহ্্ গোত্রের মিত্ররা তাদেরই মত।
ধারা-৩৯ : নিশ্চয়ই ইহুদীদের গোত্রের মিত্ররা তাদেরই মত।
ধারা-৪০ : এই চুক্তিবদ্ধ পক্ষগুলোর কেউ মুহম্মদ (সা)-এর অনুমোদন ব্যতিরেকে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে বের হতে পারবে না।
ধারা-৪১ : আহত ব্যক্তিকে প্রতিশোধ গ্রহণে বাধা দেওয়া যাবে না।
ধারা-৪২ : এবং যে ব্যক্তি কোন অপরাধ সংগঠন করবে সে তার জন্য দায়ী হবে এবং তার পরিজনও দায়ভার নেবে। তবে যদি সে মাজলুম হয় তাহলে সে নিজের প্রতিরক্ষা করতে পারবে। সে ব্যক্তি এই চুক্তির প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে আল্লাহ তার সাহায্য করবেন।
ধারা-৪৩ : ইহুদীদের ব্যয়ভার তারা বহন করবে এবং মুসলিমগণ তাদের ব্যয়ভার বহন করবে।
ধারা-৪৪ : এই চুক্তিপত্রের পক্ষগুলোর মধ্যে কেউ লড়াই করলে পক্ষগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতিহত করবেন।
ধারা-৪৫ : এবং পক্ষগুলো নিজেদের মধ্যে পরামর্শ ও কল্যাণকামিতা বজায় রাখবে। প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে, তা ভঙ্গ করবে না।
ধারা-৪৬ : এবং অবশ্যই কোন ব্যক্তি তার মিত্রের সাথে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে না এবং মজলুমকে সবাই সাহায্য করবে।
ধারা-৪৭ : যুদ্ধ অবস্থায় ইহুদীরাও মু’মিনদের সাথে ব্যয়ভার বহন করবেন।
ধারা-৪৮ : এই চুক্তির পক্ষগুলোর জন্য ইয়াসরেব একটি সংরক্ষিত ও পবিত্র নগরী হিসেবে বিবেচিত হবে।
ধারা-৪৯ : প্রতিবেশীকে নিজের মতই গণ্য করতে হবে। তার কোন ক্ষতি বা তার প্রতি কোন অপরাধ সংগঠন করা যাবে না।
ধারা-৫০ : কোন নারীকে তার পরিবারের অনুমতি ছাড়া আশ্রয় দেওয়া যাবে না।
ধারা-৫১ : এই চুক্তিপত্রের পক্ষগুলোর মধ্যে যদি এমন কোন পরিস্থিতি বা মতানৈক্যের উদ্ভব হয় যাতে এই চুক্তি নস্যাৎ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে ফায়সালার জন্য আল্লাহ ও মুহাম্মদ রাস‚লুল্লাহ (সা.)-এর দিকে রুজু করতে হবে। এই চুক্তিপত্রের উত্তর হেফাজতকারী ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীর ওপর আল্লাহ (সাক্ষী) আছেন।
ধারা-৫২ : এবং কুরাইশ ও তাদের সাহায্যকারীদের কোন আশ্রয় দেওয়া যাবে না।
ধারা-৫৩ : ইয়াসরেবকে কেউ আক্রমণ করলে চুক্তির সকল পক্ষ পারস্পরিক সাহায্যে মাধ্যমে তা প্রতিহত করবে।
ধারা-৫৪ : যখন তাদেরকে (ইহুদীদেরকে) কোন সন্ধি করতে এবং সংশ্লিষ্ট হতে আহবান করা হবে তারা সেই সন্ধি করবে এবং দায়ভার গ্রহণ করবে। যদি তারা কোন অনুরূপ সন্ধির পক্ষে যায় তখন মু’মিনদের ওপরও তাদের দাবি আছে। তবে যদি ইহুদীরা ধর্মকে আঘাতকারী কারও সাথে সন্ধি করতে চায় তা মু’মিনগণ মেনে নেবে না।
ধারা-৫৫ : প্রত্যেকের ওপর (প্রতিরক্ষার) সে অংশ বর্তাবে যা তার সম্মুখ দিক থেকে আসবে।
ধারা-৫৬ : ‘আওস গোত্রীয়া ইয়াহুদী তাদের মিত্রগণ এবং তাদের নিজেদেরকে এই চুক্তিপত্রের পক্ষগুলোর অনুরূপ গণ্য করা হবে। এই চুক্তিপত্রের পক্ষগুলো থেকে তারা বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী আচরণ পাবে। ইবন ইসহাক থেকে ইবন হিশামের বর্ণনা অনুযায়ী এখানেই মদীনা সনদ সমাপ্ত হয়েছে। তবে তিনি ইবন ইসহাকের আরেকটি বর্ণনা যুক্ত করেছেন, যা নিম্নরূপ :
ধারা-৫৭ : নিশ্চয়ই অঙ্গীকার রক্ষা করতে হবে, ভঙ্গ করা যাবে না। কেউ কোন বিরূপ কর্মতৎপরতায় জড়িত হলে তা তার ওপরই বর্তাবে।
ধারা-৫৮ : এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ এই চুক্তিপত্রের বিষয়াদির সত্যনিষ্ঠ বাস্তবায়ন ও প্রতিশ্রুতি প্রতিপালনকারীদের সাথে আছেন।
ধারা-৫৯ : এবং এই লিখিত সনদ কোন জালেম বা অপরাধীকে রক্ষা করবে না।
ধারা-৬০ : এবং মদীনা থেকে যে বাইরে যাবে সে নিরাপদ এবং যে এর অভ্যন্তরে অবস্থান করবে সেও নিরাপদ। তবে সে জুলুম করবে এবং অপরাধ করবে সে নয়।
ধারা-৬১ : নিশ্চয়ই আল্লাহ ও মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সা.) সে ব্যক্তির সাহায্যকারী যে সত্যনিষ্ঠ ও সংযত। (সূত্র : সীরাত ইবনে হিশাম)।

লেখক : স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন