ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি তেল চিনি গুঁড়ো দুধসহ নিত্যপণ্য

34

তেল, চিনি, গুঁড়ো দুধসহ ভোক্তাদের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসাবে বিবেচিত সব দ্রব্য ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ক্যাব।
২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর হলে ভোক্তারা যাতে একই পণ্যে একাধিকবার ট্যাক্স দিতে বাধ্য না হন সেদিকেও লক্ষ রাখার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। আলোচনা শেষে সংসদে পাশ হওয়ার পর আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হবে বাজেট।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেটে ভোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। খবর বিডিনিউজের
তিনি বলেন, এবারের বাজেটে ২০১২ সালের ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একক ১৫ শতাংশ কর হার ছাড়াও ৫, ৭ দশমিক ৫ এবং ১০ শতাংশ হারে করারোপের বিধান করা হয়েছে। এতে ক্রেতা-ভোক্তা বাড়তি কর পরিশোধ করতে বাধ্য হতে পারে। তাছাড়া ভ্যাটের পরিধি বাড়ানোর কারণে বেশ কিছু পণ্য, যেমন নিত্য ব্যবহার্য ভোজ্যতেলের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এতে করে পণ্যমূল্য বাড়বে।
“আমরা প্রত্যাশা করব, সংসদে আলোচনার পর পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তাদের যাতে বাড়তি কর/মূল্য পরিশোধ করতে না হয় তার ব্যবস্থা করা হবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্য ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখা হবে।”
নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের আগে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভ্যাট সংগ্রহের উদ্যোগ বাস্তবায়নে জোর প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানায় ক্যাব। অন্যথায় ভোক্তার কাছ থেকে আদায় হওয়া ভ্যাট ব্যবসায়ী বা বিক্রেতার কাছেই থেকে যাবে বলেও মন্তব্য করেন গোলাম রহমান।
তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নির্ভর করবে ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়ার যান্ত্রিকীকরণের ওপর। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভ্যাটের তথ্যাদি সংরক্ষণে ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) এবং সেলস ডেটা কনট্রোলার (এসডিসি) ব্যবহারের ওপর। এক্ষেত্রে কৌশলী বাস্তবায়ন ও কঠোর নজরদারির প্রয়োজন আছে।
“সরকার যদি যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারে তাহলে জনগণের কাছ থেকে আদায় করা ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা না হয়ে ব্যবসায়ীর কাছে থেকে যাবে। তাই ভ্যাট আহরণের যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।”
গোলাম রহমান বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল, অর্থমন্ত্রী তার প্রথম বাজেটে শুল্ক নীতি পর্যালোচনা করে ক্রমান্বয়ে আমদানি শুল্ক হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। কিন্তু তা না করে বরং গুঁড়ো দুধ, তেল ও চিনিসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব যথাযথ হয়নি বলে ক্যাব মনে করে। সংসদে আলোচনার পর এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হবে বলে আশা করছি।
মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব করার পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর কর না বাড়ানোর দাবি জানানো হয় ক্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আয়-ব্যয় কিংবা মুনাফার হিসাব একটা গোজামিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংসদে বাজেট আলোচনার মধ্যে এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। বাজেটে বিদ্যুতের হুইলিং চার্জের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’।