ভোলার সংঘর্ষের ভিডিও ফুটেজে চেনামুখ : কাদের

26

ভোলার বোরহানউদ্দিনে এক হিন্দু যুবকের ফেসবুক হ্যাকড হওয়ার পর ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সহিংসতার যে ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, সেখানে ‘কিছু কিছু চেনামুখ’ এসেছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, যাদের শনাক্ত করা হয়েছে, তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোলার সংঘর্ষ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির-বাড়িতে হামলার পিছনের শিবির ও ছাত্রদলকর্মীদের জড়িত থাকার যে খবর কয়েকটি পত্রিকায় এসেছে, সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সাংবাদিকরা।উত্তরে তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ কিছু কিছু চেনা মুখ, এদের ছবি এসেছে এবং সেটা আরও ভালোভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ভিডিও ফুটেজ থেকে অনেক কিছু পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সবকিছু শেষ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভ নামের এক যুবক গত শুক্রবার রাতে বোরহানউদ্দিন থানায় গিয়ে তার ফেসবুক আইডি হ্যাকারের কবলে পড়েছে বলে একটি জিডি করেন। তবে তার আইডি থেকে মেসেঞ্জারে পাঠানো ‘ধর্ম অবমাননাকর’ বক্তব্যের ‘স্ক্রিনশট’ ফেসবুকে ছড়ালে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর বিডিনিউজের
শুভর বিচারের দাবিতে রোববার বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে ‘মুসলিম তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়।
একই সময়ে বোরহানউদ্দিনের এক হিন্দু পল্লীতে উত্তেজিত মুসলিমদের ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, যদিও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের খবরের ভিড়ে তা অনেকটা আড়ালে থেকে যায়।
এ ঘটনায় সরকার ‘খুব কঠোর অবস্থানে’ রয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত চলছে এবং সঠিকভাবে তদন্ত সম্পন্ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
ভোলার ঘটনার পেছনে কোনো ‘ষড়যন্ত্র’ আছে কিনা, সা¤প্রদায়িক শক্তির কোনো ‘দুরভিসন্ধি’ আছে কিনা- সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে, তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়টির একটা সুরাহা করা দরকার। অন্যান্য দেশেও এ সমস্যাটি হচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মাঝে মাঝে এ ধরনের সমস্যা হয়। আমাদের আইসিটি বিভাগ ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
সড়ক পরিবহন আইন
বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার পর নতুন বিধি যোগ করা হলেও শাস্তির মত বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, বিধি তো মূল আইনের সংশোধনী নয়। বিধি তো হবেই আইন থাকলে। বিধিতে আইনের মূল বিষয় যেগুলো যেমন শাস্তির বিষয়, দন্ডের বিষয় এগুলো যেভাবে ছিল সেভাবেই থাকবে।
গত বছরের ৮ অক্টোবর ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর গেজেট জারি করা হলেও তার কার্যকারিতা ঝুলে ছিল। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এ আইন কার্যকর হচ্ছে জানিয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
গত বছর ঢাকায় বাসচাপায় দুই ছাত্র-ছাত্রীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে আগের আইন কঠোর করে ২০১৮ সালে আগের আইন কঠোর করে এই আইনটি করা হয়েছিল।
এই আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, পরিবহনের (মালিক-শ্রমিক) দিক থেকে কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি ছিল। তারপরও যে যেটা বলুক, আইনটা হয়েছে, এখন আইন কার্যকর করা জাতির দাবি।