ভোটার দিবসের নামে ‘তামাশা’ : মোশাররফ

43

ভোটাধিকার ‘হরণকারী সরকার’ জাতীয় ভোটার দিবস পালনের নামে জনগণের সঙ্গে ‘তামাশা’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘জনগণ আশ্চর্যান্বিত যে, পরপর দু’টি ঘটনা যেখানে জনগণ ভোট দিতে পারে নাই, ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে, সেখানে আজকে বাংলাদেশ সরকার ভোটার দিবস পালন করছে!’
জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার ঢাকার শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন মোশাররফ।
‘ভোটার হব, ভোট দেব’ স্লোগানে গতকাল শুক্রবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে জাতীয় ভোটার দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই স্লোগানকে ‘হাস্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘ভোটার যেখানে ভোট দিতে পারে না সেখানে আজকে স্লোগান হচ্ছে- ভোটার হোন, ভোট দিন।… এই সরকারই জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে এই দিবস পালন করে আজকে এটাকে একটা হাস্যকর বিষয় করেছে। একটা তামাশা সৃষ্টি করেছে’। খবর বিডিনিউজের
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনর্র্নির্বাচন চেয়েছিল বিএনপি ও তাদের শরিকরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং দুই সিটির নতুন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি।
সিটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘দেখলাম, সেখানে ভোটাররা কেন্দ্রে যায়নি, কেউ ভোট দিতে দেখেনি। আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখেছি, যারা এই ভোট নেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তারাও আশ্চর্য হয়েছেন কেন ভোটার নেই!’
উপ নির্বাচনে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ার যে হিসাব নির্বাচন কমিশন দিয়েছে- তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘এই ভোট কোথা থেকে আসল? যেভাবে সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছিল, জনগণের ভোট দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। ভোট হয়েই গিয়েছিল এবং এইভাবে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট তারা (আওয়ামী লীগ) দিয়ে দিয়েছিল। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় কালকেও (বৃহস্পতিবার) এমনিভাবেই ভোট পড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। এই সরকার তাদের সিস্টেমের মাধ্যমে এটা সম্পন্ন করেছে’।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নেরে জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা মোশাররফ বলেন, ‘অনাস্থা’ থেকেই জনগণ ভোট দিতে যায়নি বলে তিনি মনে করেন। এই সরকার ও এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচনকে জনগণ বিশ্বাস করবে না, সেটা কালকে ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখান করে প্রমাণ করেছে’।
গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধার করে ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে’ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো পুনর্গঠিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রে পুনর্গঠনের মাধ্যমে আমরা দলকে শক্তিশালী করে ঘুরে দাঁড়াব… এটাই আজকে আমাদের শপথ।
জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান খন্দকার মোশাররফ। অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মৎস্যজীবী দলের নাদিম চৌধুরী, সেলিম মিয়া, জাকির হোসনে খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মৎসজীবী দলের কমিটি ভেঙে দিয়ে রফিকুল ইসলাম মাহতাবের নেতৃত্বে ১৫৪ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয় বিএনপি। দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব), জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা করেছে।