ভোটারদের দ্বারে দ্বারে প্রার্থীদের ভোট ও দোয়ার আর্জি

14

মো. এমরান হোসেন, ফটিকছড়ি

ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামি ১৬মার্চ ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গত ২৮ ফেব্রæয়ারি দুপুরে প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে মাঠে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রার্থী ও তাদের অনুসারীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো পৌর এলাকা। গণসংযোগ ও পথসভার মাধ্যমে তারা ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রæতি। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে জনগণ নৌকাকেই বেছে নেবেন, এমনটাই আশা করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে বিজয়ী হওয়ার দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর ভোটাররা জানিয়েছেন, তারা সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই ভোট দেবেন।
নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থী, সংরক্ষিত আসনে ৮ জন, কাউন্সিলর পদের সাধারণ আসনে ৪১ প্রার্থীসহ মোট ৫৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- মেয়র পদে আ. লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী একে জাহেদ চৌধুরী, নাজিরহাট আদর্শ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকে মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোবাইল প্রতীকের আনোয়ার পাশা, মনোনয়ন প্রত্যাশী আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী চামচ প্রতীকে জাহাঙ্গীর আলাম চৌধুরী, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জগ প্রতীকে এডভোকেট মো.ইসমাইল গনী।
জানা যায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ১১জন নেতাকর্মী মেয়র পদে মনোনয়নপত্র কিনেন। তবে শেষ পর্যন্ত নৌকার প্রতীক পান সাবেক ছাত্রনেতা এ কে জাহেদ চৌধুরী। দলীয় পদ পদবীর বাইরেও কলামিস্ট জাহেদ চৌধুরীর এলাকায় আছে নিজস্ব একটি অবস্থান। তবে বিএনপি- জামায়াত ও হেফাজত অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত নাজিরহাটে প‚র্বস‚রীদের মতো তার জন্যও নির্বাচনী বৈতরণী পার করা কঠিন হবে। এ ছাড়া আছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর চৌধুরী। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে প্রবাসে থাকেন। সেখানে আ.লীগের রাজনীতি সাথে জড়িত তিনি। তাছাড়া মেয়র প্রার্থী আনোয়ার পাশা আওয়ামী ঘরাণার মানুষ।
দানবীর হিসেবে পরিচিত আনোয়ার পাশা গতবার মেয়র পদে নির্বাচন করেছিল। তখন আ.লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে তার সাথে প্রচারণা করতে দেখা গিয়েছিল। তিনি দলীয় মনোনয়ন না চাইলেও সদ্য সমাপ্ত নাজিরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচনে দলীয় ফরম নিয়েছিলেন।
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন না করার ঘোষণা দেওয়ায় মেয়র পদে প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করছেন বিএনপির সর্মথক ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন চৌধুরী। দলীয় কার্যক্রমে তেমন তাকে দেখা না গেলেও ভোটের বৈতরণী পার হতে নিজেকে বিএনপির কোন পদবী নাই উল্লেখ কওে, সমর্থকও নই বলে দাবি করছেন ঝংকার গ্রুপের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন। যদিও উপজেলা ও জেলা বিএনপির দাবি নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে তাদের কোনো প্রার্থী নেই।
এই ছাড়া জগ মার্কা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এডভোকেট ইসমাইল গণি। তরুণ এই আইনজীবী বর্তমানে কোনো রাজনীতিতে জড়িত না থাকলেও এক সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। যে কারণে স্থানীয় জামায়াত-শিবিরে সমর্থন পাচ্ছেন তিনি।
নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অরুণ উদয় ত্রিপুরা বলেন, ১৬ মার্চ নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ৯টি ওর্য়াডে ২২টি ভোট কেন্দ্রে ৪৪ হাজার ৭শত ৮৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। যার মধ্যে রয়েছেন ২৩ হাজার ৯৩০ জন পুরুষ, ২০ হাজার ৮৫৬ জন মহিলা ভোটার।
নাজিরহাট পৌরসভার নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার চট্টগ্রাম অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান বলেন, নির্বাচনে ৫মেয়র, সংরক্ষিত আসনে ৮, কাউন্সিলর পদে সাধারণ আসনে ৪১প্রার্থীসহ মোট ৫৪প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। নির্বাচনী আচরণ মেনে প্রার্থীদের প্রচারণা চালানোর জন্য বলা হয়েছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা একটা শান্তিপ‚র্ণ ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।