ভোগ্যপণ্য ও পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য বন্ধ করা জরুরি

28

মানুষ অতিমাত্রায় অস্তিত্ব কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। প্রতারণা, দূর্নীতি, লোকঠকানো দেশের অধিকাংশ মানুষের স্বভাবজাত হয়ে আছে। যে যেভাবে, যেখানে আছে, অন্যকে ঠেকানোর-ঠকানোর তালে মশগুল। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার খবর থেকে জানতে পারলাম ৭ জুন চট্টগ্রামের ওষুধের বড় বাজার হাজারী গলির ২৯ ফার্মেসিকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাদের অপরাধ মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ বিক্রি এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি। এ ঘটনা দ্বারা বোঝা যায় দেশের সংকটময় মহুর্তে কসাইর মতো আচরণ করছে ওষুধ ব্যবসায়ীরা। একদিকে মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ বিক্রি করে রোগীর স্বাস্থ্যের সমূহ ক্ষতি করে যাচ্ছে, অন্যদিকে ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রিতে অতিরিক্ত মোনাফা করছে মানুষের রোগবালাইয়ের মতো বিপদে।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের ১১ লাখ টাকা জরিমানা করে বসে থাকলে হবে না। অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ীরাও সময়ে অসময়ে সাধারণ ক্রেতাদের গলাকটা দাম নিয়ে পণ্য বিক্রি করে যাচ্ছে। পত্রিকার খবর থেকে জানতে পারি পেঁয়াজ-রসুনের দাম কমলেও চালের বাজার চড়া। বোরো ধান সবে মাত্র কৃষকের ঘরে উঠলো, এর মধ্যে কি হলো যে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার? সারা বছর নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা নানা ছল চাতুরির অজুহাতে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণকে নিত্য হয়রানি করে যাচ্ছে। পাইকারী ও খুচরা নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ীদের ব্যাপারেও জেলা প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান তথা ভ্রম্যমাণ আদালত সক্রিয় রাখা জরুরি।
দেশের গণপরিবহন দীর্ঘদিন করোনার কারণে বন্ধ ছিল। তাদের সমস্যা নিয়ে আমরা পত্র-পত্রিকায় বহুবার লিখেছি। আমরা তাদের নিয়ে ভাবলেও একজন সাধারণ যাত্রী হিসেবে তারা আমাদের কথা ভাবে না। পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য চলছে যুগযুগ ধরে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে গণপরিবহন বন্ধ করে দিল সরকার দেশের স্বার্থে, জনগণের জীবন রক্ষার স্বার্থে। সেই গণপরিবহন নানাশর্তে আবার খুলে দিল সরকার। খুলে দেয়ার সাথে সাথে তারা তাদের নৈরাজ্য শুরু করল নতুন মাত্রায়।
আমরা জানি সরকার স্বাস্থ্য বিধির কথা চিন্তা করে তাদের ভীড়ভাট্টা এড়ানোর কথা বলেছে। তারা অজুহাত দেখালো কম যাত্রী নিয়ে তাদের পোষাবে না। সরকার তাদের ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে দিল করোনা কালীন সময়ে গাড়ি চালানোর জন্য। তারা প্রথম দিন থেকেই ৬০ শতাংশের স্থলে একশত ২০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সময়ের দাবী। পরিবহন সেক্টরকে সোজা করা না গেলে অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বংস্ত সাধারণ মানুষের এ দূর্ভোগ থামবে না। সাধারণ যাত্রীরা মনে করে পরিবহন সেক্টরে নজর দেয়া জেলা প্রশাসনের খুবই জরুরি।