ভূমি অফিসের সবাইকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে

38

ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব জমা দেয়ার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। মন্ত্রণালয় থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হিসাব দাখিল জমা দিতে লিখিত নির্দেশনা জারি করার ঘোষণা দেন তিনি। একইসাথে ভূমি অফিসগুলোতে দুর্নীতি ও হয়রানিরোধে ভূমি মন্ত্রণালয়ের একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘ভূমি অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রত্যেক ভূমি অফিস সিসিটিভি (ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা)’র আওতায় আনা হবে। মন্ত্রণালয় থেকে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। শুধুমাত্র কে আসছেন বা যাচ্ছেন এ জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে না। সেখানে ভয়েস রেকর্ডিং হবে, যাতে মানুষ সেবা পায় এবং জনদুর্ভোগ কমে। জনগণের হয়রানি কমাতে শিগগিরই দেশের বিভিন্ন ভূমি অফিসে আবারও সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে।
ভূমি সংক্রান্ত মামলার জটিলতা নিরসনে প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারির পর মামলা হয়। ভূমি অফিসের নিচু শ্রেণির কর্মচারীরা এর সঙ্গে জড়িত। এসব হয়রানি ঠেকাতে নতুন সিস্টেম বের করছি। আমাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা আছে। একটু সময় দেন। এক বছরের মধ্যে দৃশ্যমান উন্নতি হবে। যাদের সমস্যা আছে, তাদের সরে যেতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অফিসগুলোতে হয়রানির অনেক বিষয় আছে। দুর্নীতির বিষয়ে আমি জিরো টলারেন্স।’
নিজেও দুর্নীতিমুক্ত থাকার ঘোষণা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সততা ও স্বচ্ছতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণমন্ত্রী করেছেন। ব্যর্থতার দায় নিয়ে আমি এখান থেকে যাবো না। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি এসেছি সম্মানের জন্য। দুর্নীতি যেইদিন আমাকে র্স্পশ করবে, সেইদিন আমার শেষ দিন। জনগণকে ভালো কিছু দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমদিন থেকেই কাজে নেমে গেছি।’
কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যথাযথ উদ্যোগ ও সরকারিভাবে অর্থ ছাড় দেওয়া হবে। কোনও সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এখানে অনেক রাজনৈতিক বিষয় থাকলেও স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৪ মন্ত্রী-উপমন্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়ন কাজকে আরও তরান্বিত করার কথা জানিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘সবাই মিলে কাজ করতে চাই। আমাদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না। চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য হিসেবে এই অঞ্চলের জন্য বিশেষ কিছু করতে চাই। এছাড়াও চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের আবাসন সংকট নিরসনে সরকারি জমি বরাদ্দ দেওয়ারও আশ্বাস দেন ভূমিমন্ত্রী।
মতবিনিময়কালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, এম নাসিরুল হক, শহীদুল আলম, চৌধুরী ফরিদ, শামসুল ইসলাম, তপন চক্রবর্তী, এজাজ মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।