ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা এড়ানোর আহব্বান বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর

18

ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনায় অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়া। ভারতীয় বিমান হামলার পর থেকে কাশ্মির সীমান্তজুড়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রদর্শনী চলছে। এই অবস্থায় উত্তেজনা এড়াতে দুই পক্ষের প্রতি আহব্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতের‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের’ গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় বাহিনীটির অন্তত ৪০ জন সদস্য প্রাণ হারান। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। মঙ্গলবার ভারতীয় বিমান বাহিনী ৭১-পরবর্তী ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের আকাশসীমায় ঢুকে বিমান হামলা চালানোর পর জানায়, জইশ-ই মোহাম্মদের ঘাঁটি ধ্বংসের উদ্দেশ্যেই তারা ওই ‘অসামরিক অভিযান’ পরিচালনা করেছে। বুধবার সকালে দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এক পাইলটকে আটকের দাবি করে পাকিস্তান। বিপরীতে ভারতও পাকিস্তানের একটি ফাইটার জেট ভূপাতিত করার দাবি করেছে। যে কোনও মূল্যে উত্তেজনা এড়িয়ে সংযম প্রদর্শনের আহব্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
২৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও লেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। উভয়ের সঙ্গে আলোচনাকালেই তিনি উত্তেজনা কমাতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন। এর আগে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাং এক বিবৃতিতে বলেন, চীন চায় ভারত-পাকিস্তান পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখুক। এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। দেশটির সরকারের শীর্ষ কূটনীতিক রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ওয়াং ই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বিষয়ে ফোনে কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার ওই আলাপকালে পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। এছাড়া বৃহস্পতিবার জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও জানিয়েছেন তারা সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন।
এদিকে উভয় দেশকে সংযত থাকার আহব্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। দুই দেশের সঙ্গেই নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মধ্য দিয়ে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের তাগিদ দিয়েছে তারা। ইইউ সদস্য রাষ্ট্র জার্মানি পৃথক বিবৃতিতে একই ধরনের অবস্থান প্রকাশ করেছে। বুধবার জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক দূত এই আহব্বান জানায়। এছাড়া দুই উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। বুধবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স প্রস্তাব দিয়েছেন যেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জইশ ই মোহাম্মদের প্রধান আজহার মাহমুদকে কালোতালিকাভুক্ত করে। তবে চীন এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।