ভারতে করোনা পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন যে নারীর হাত ধরে

57

সারাবিশ্বে থাবা বসিয়েছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম দেশে ভারতেও করোনাভাইরাস ছোবল বসিয়েছে। গতকাল শনিবার ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত ৯১৮ জন। আরও বহু লোক আইসোলেশনে ভর্তি।
তবে ভারতে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট নেই বলে কড়া সমালোচনা চলছিল। এর মধ্যেই সাফল্যের দেখা পেল দেশটি। প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ ভারতে তৈরি কোনো কিট শতভাগ নির্ভুল ফল পাওয়ার সাফল্য দেখিয়েছে। আর এর পেছনে কাজ করেছেন ভারতের মহারাস্ট্রের পুনের মাইল্যাব ডিসকোভারির গবেষণা ও উন্নয়ন প্রধান মিনাল দাখেভে ভোঁসলে। তিনি একজন ভাইরোলজিস্ট এবং ভাইরাস নিয়ে কাজ করেন।
প্রথম ভারতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাইল্যাব করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কিট বানিয়ে বাজারজাত করার অনুমতি পেয়েছে। মাইল্যাবের চিকিৎসা বিষয়ক পরিচালক গৌতম ওংকারে শুক্রবার বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ও সি এবং অন্যান্য অসুখের পরীক্ষার জন্য কিট বানিয়ে থাকে। তারা এক সপ্তাহে এক লাখ কিট সরবরাহ করতে পারবে। প্রয়োজন হলে সপ্তাহে দুই লাখ কিট দেওয়ার সক্ষমতা তাদের আছে। মাইল্যাবের একেকটি কিট দিয়ে ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। একেকটি কিটের দাম পড়বে ১২০০ রুপি। ভারত এমন একেকটি কিট বিদেশ থেকে ৪৫০০ রুপি দিয়ে কিনেছে। সেই হিসেবে মাইল্যাবের কিট সাশ্রয়ী।
বিজ্ঞানী মিনাল ভোঁসলে বলেন, তাদের কিট দিয়ে আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই ফল পাওয়া সম্ভব। আমদানি করা কিটগুলো দিয়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করে ফল পেতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা লাগছে। কীভাবে তিনি ও তার দল এই কিট উৎপাদনে সাফল্য পেলেন, তার বর্ণনা দিলেন। তার ভাষায়, এমন কিট বানাতে সাধারণত তিন মাস থেকে চার মাস সময় লেগে যায়। কিন্তু তারা এটা রেকর্ড সময়ে করেছেন। এটি তৈরিতে সময় লেগেছে মাত্র দেড় মাস। এই তাড়ার পেছনে ছিল মিনালের ব্যক্তিগত একটি কারণও। তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। এই মাসেই তার সন্তান জন্ম দেওয়ার তারিখ ছিল। তিনি চাইছিলেন সন্তান জন্ম দেওয়ার আগেই কাজটি শেষ করতে। গত ফেব্রূয়ারিতে তারা কাজ শুরু করেন। দেড় মাসের মধ্যেই সাফল্য পান। সূত্রঃ বিবিসি