‘ভন্ড বাবার আস্তানা’ গুঁড়িয়ে দিলেন ইউএনও

108

অনিল বড়ুয়া ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন হাটহাজারী পৌরসভার ১ নম্বর সড়ক আদর্শ গ্রামের উত্তর পাহাড়ে। বিগত ৮ বছর আগে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কথিত আছে তিনি জীবদ্দশায় ধর্মান্তরিত হয়ে নাম রেখেছিলেন ইবরাহীম চিশতী। মৃত্যুর পর তাকে স্থানীয় কবরস্থানে এলাকাবাসী কবরস্থ করতে না দেওয়ায় দাফন করা হয়েছিল তার শয়নকক্ষে। আর তার কবরটিই পরবর্তীতে ধীরে ধীরে ‘বাবার আস্তানা’ নামে পরিচিত লাভ করে।
গত ৬ বছর ধরে এই কথিত ‘বাবার আস্তানা’য় চলছে বাৎসরিক ওরশ মাহ্ফিল। এছাড়াও বাবার আস্তানাকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান পালিত হতো ঘরোয়াভাবে। সারারাত নাচে-গানে অতিষ্ঠ ছিল আশেপাশের শত শত পরিবার। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে এলাকাবাসী কথিত সেই ‘বাবার আস্তানা’র এসব অপকর্ম সহ্য করে আসছিলেন। এরমধ্যে হযরত শাহ মুনছুরিয়া দায়রাপাক এর ব্যবস্থাপনায় এলাকার নানা স্থানে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও রশিদ বই নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকা উত্তোলনের (চাঁদা) মাধ্যমে আগামি ৩ মে ওরশ উদ্যাপন করতে জোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। স্থানীয়রা বিষয়টি হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমীনকে অবগত করেন।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার বিকেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ শোনেন। এরপর সবার সহযোগিতায় বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে কথিত ভন্ড ‘বাবার আস্তানা’টি গুঁড়িয়ে দেন। এ সময় এলাকার শত শত উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে জড়ো হতে দেখা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাটহাজারী বাসস্টেশনস্থ অদুদিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি আবদুল ওহাব আল কাদেরী নামে এক ব্যক্তি এসব ঘটনা তথা অনৈতিক কর্মকান্ডের ইন্ধনদাতা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নার কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগ। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, এটি কোনো মাজার না। তবে মনছুরাবাদ পীরের মুরিদ ছিলেন মৃত ব্যক্তি। তাই তার কবরকে দায়রা পাক হিসেবে তৈরি করে আমি তাঁর দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম।
ইউএনও রুহুল আমীন মুঠোফোনে পূর্বদেশকে জানান, ওই এলাকায় অনিল বড়ুয়া নামে এক লোকের মৃত্যুর পর তার পরিবারকে সাথে নিয়ে মাজার বানানোর পরিকল্পনা ছিল কিছু অসাধু ব্যক্তির। অভিযান চালিয়ে এই আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যখন থেকে এসব শুরু হয়েছিল তখনি যদি এসব কার্যক্রম বন্ধ করা প্রয়োজন ছিল।