ব্যয়বহুল কক্সবাজার

44

কক্সবাজারকেও ব্যয়বহুল নগরী ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ফলে সেখানকার সরকারি চাকরিজীবীরা মূল বেতনের ৫০% বাড়ি ভাড়া প্রাপ্য হবেন। ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ উন্নত নগরগুলো ব্যয়বহুল ঘোষিত হয়েছে। তবে পর্যটন নগরী কক্সবাজার এই তালিকার বাইরে ছিল। সেখানকার কর্মচারীদের টিএডিএও বাড়বে। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
পৌর এলাকায় জীবন নির্বাহে অত্যধিক ব্যয় এ সিদ্ধান্তের মূলে কাজ করেছে। এই ঘোষণার খপ্পরে পড়বে দেশি বিদেশি পর্যটকসহ স্থানীয় সর্বসাধারণ। মিয়ানমার শরণার্থীদের সামাল দিতে বেসরকারি সংস্থাগুলো সেখানে অত্যন্ত তৎপর। তাদের বিরাট কর্মিবাহিনীকে হোটেল মটেল ও বাসা-বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। স্থানীয় পণ্য মূল্যবৃদ্ধির এটি অন্যতম কারণ বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অভিমত। এতে সায় ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রজ্ঞাপন জারির পর আর্থিক বিষয়টি দেখভাল করবে অর্থ মন্ত্রক। গাজীপুর নারায়নগঞ্জ কক্সবাজারের আগেই হয়েছে ব্যয়বহুল নগরী।
প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে যান। পর্যটকদের প্রতি লক্ষ্য রেখে বহুকাল আগে থেকেই অঘোষিতভাবে কক্সবাজার এমনিতেই ব্যয়বহুল ছিল। হোটেল ও খাবার ব্যবসায়ীরা একরকম গলাই কেটেছে পর্যটকদের। সরকারিভাবে অবকাঠামোর উন্নয়ন তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না। নগরে প্রধান দু’টি সড়কই একমাত্র ভরসা। নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। সৈকতের আশপাশ শুটকি বেপারিদের দখলে। প্রশাসন সেদিকে দৃষ্টি দিতে পারে। সৈকতের আশপাশে আবর্জনায় ভর্তি। ছোট্ট এ শহরকে আরো সুন্দর কিভাবে করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা পাহাড় বন ধ্বংস করে ফেলেছে। কিছু দিন আগে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন রোহিঙ্গা আমাদের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দেখা দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের জন্য। তারা এখন কক্সবাজারবাসিসহ দেশের অর্থনীতিতে বিষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়সহ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর চাপ সত্তে¡ও এদের ফিরিয়ে নিচ্ছে না মিয়ানমার। তারা শুধু কালক্ষেপণ করেই চলেছে। আমরা চাই ব্যয়বহুল পর্যটন নগরী পূর্বেকার সৌন্দর্য ও পরিবেশ ফিরে পাক। নিজ দেশে ফিরে যাক রোহিঙ্গারা। সবুজে-সবুজে, বন-বনানিতে নান্দনিক শোভা ফিরে পাক কক্সবাজার এই কামনা আমাদের। ব্যয়বহুল ঘোষণায় দ্রব্যমূল্য যেন আমজনতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে না যায় সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দিতে হবে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে।