ব্যক্তি বা দল নয় সংবিধানের কাছেই দায়বদ্ধতা

33

উপজেলা ভোটে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন ভবনে দ্বিতীয় ধাপের ১২৯ উপজেলা নির্বাচনে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফ করেন তিনি। দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ এসব উপজেলায় ভোট হবে। এর আগে ১০ মার্চ হবে প্রথম ধাপের ভোট।
সিইসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মনে রাখতে হবে আপনাদের দক্ষতার উপরে, পারদর্শিতার উপরে, নিরপেক্ষতার উপরে নির্ভর করে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আমি আশা করি, কখনও কারও প্রতি কোনো রকমের দুর্বলতা আপনাদের থাকবে না। কোনো পক্ষপাতিত্ব থাকবে না। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তারা একমাত্র প্রজাতন্ত্র এবং সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির উপর দায়বদ্ধ নন। কারও প্রতি কোনো রকমের দুর্বলতা, অনুরাগ, বিরাগ কোনোকিছু আপনাদের থাকবে না। কেবলমাত্র নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য যতটুকু করা দরকার ততটুকু আপনাদেরকে করতে হবে।’-খবর বিডিনিউজের
সিইসি বলেন, ‘যদি কোথাও কোনো অনিয়ম হয়। প্রিজাইডিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত হয়ে যায়।
প্রিজাইডিং অফিসার যদি সিদ্ধান্ত দেয় যে, তার পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব নয়, রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে নির্বাচন তার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত। তাহলে সে কমিশনে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে।’
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচন সর্বতোভাবে অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় তা কৌলিন্য হারিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র কখনও একদলীয় হয় না। বহুদলীয় না হলে গণতন্ত্র রূপ লাভ করে না। এজন্য নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ার বিষয়টিতে সর্বদা গুরুত্ব আরোপ করা হয়। তবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া নিতান্তই প্রাথমিক প্রাপ্তি। এবারের উপজেলা নির্বাচন সর্বতোভাবে অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় তা কৌলিন্য হারিয়েছে। নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য হতে হয়। এ দুটি শব্দের পরিমাপক জনগণ, যারা নির্বাচন করেন তারা নয়। এই প্রেক্ষাপট মনে রেখে আগামী উপজেলা নির্বাচন যাতে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার প্রতি জনগণেকে অধিকতর আস্থাশীল করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান। ইসির এ সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, জেলা পরিষদের সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া অনেক কলেজ সরকারি হয়েছে কিন্তু সেখানে যারা চাকরি করেন, যারা এখনো সরকারি হন নাই, তাদেরকেও উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করতে হলে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে হবে। অনুষ্ঠানে অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।