বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক  রেল ক্রসিংয়ে ফটক নেই

98

সীতাকুন্ড পৌরসদর ফকিরহাট এলাকায় মহাসড়ক হয়ে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের প্রবেশপথে রেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফটক এবং প্রহরী না থাকায় ওই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। গত কয়েক বছরে ওই ক্রসিংয়ে সাতটি দুর্ঘটনায় ১৭জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। স্থানীয় এলাকাবাসী ও রেল কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের প্রথম ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করার মুখে রেল ক্রসিংয়ে কোন ফটক এবং প্রহরী দায়িত্ব পালন করছে না। এ ক্রসিং দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানের প্রতিদিন প্রায় ২০টির অধিক ট্রেন আসা-যাওয়া করে। এছাড়া ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রতিদিনই বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটো-রিক্সা, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে দর্শনার্থী আসে। ২০১২ সালে এ ক্রসিংয়ে মাইক্রোবাস যোগে একদল দর্শনার্থী ইকোপার্কে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামমুখী একটি ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত হয় ৮ জন। এ ঘটনার পর এখানে অস্থায়ীভাবে একজন প্রহরী নিয়োগ দেয়া হলেও তিনমাস পর তাকে তুলে নেয়া হয়েছে। এরপর থেকে কোন প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়নি। ২০১০সালে ওই স্থানে সিএনজি টেক্সি সাথে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়। সম্প্রতি নোয়াখালী থেকে আসা একটি পিকনিকের বাস ট্রেনের সাথে ধাক্কা লাগায় বাসের পিছনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে বাসে থাকা ভ্রমন পিপাসু ১৫ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। আহত পরবর্তী সীতাকুÐ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রæত প্রথমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করেন। এছাড়া সেখানে কোন স্থায়ী ফটক নির্মাণ করা হয়নি। এলাকাবাসী জানান, ১৯৯৯সালে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো পার্ক প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর থেকে এখানে প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের ভীড় করতে শুরু করে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি চলাচল করে। ইকো পার্ক কর্তৃপক্ষ কয়েকবার এই রেল ক্রসিংয়ে গেট এবং একজন প্রহরী দেয়ার আবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোন উদ্যোগ নেইনি। যার ফলে মারাত্বক বিপদের শংকা নিয়ে ইকো পার্কে দর্শনার্থীরা আসা যাওয়া করতে হচ্ছে।
বোটানিক্যাল গার্ডেন এর রেঞ্জ অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, প্রতি শীত মৌসুমে প্রতিদিন শতাধিক গাড়ী প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার জন্য দর্শনার্থীরা এখানে সমাগম হয়। তাই এই রেল ক্রসিংস্থানে একটি ফটক খুবই জরুরি মনে আমরা মনে করছি। ইকোপার্ক ব্যবস্থাপনা ইজারাদার মো. সাহাবউদ্দিন জানান, বাংলাদেশের প্রথম ইকো পার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের দর্শনীয় স্থান দেখতে আসা ভ্রমন পিপাসুরা এ পথ দিয়ে একটা শংকা নিয়েই আসতে হয়। বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে একাধিবার অবগত করা হলেও কোন ব্যবস্থা এখনো করেনি। ফটকবিহীন রেল ক্রসিংয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যানচলাচলের কথা স্বীকার করে সীতাকুন্ড ষ্টেশন কর্মকর্তা মতিলাল বড়ুয়া জানান, দুর্ঘটনার পর রেল কতৃপক্ষ ২০০৯ সালে ইকোপার্ক রেল ক্রসিংয়ে একজন অস্থায়ীভাবে প্রহরী নিয়োগ দিয়েছিল। কিছুদিন পর আবার তাকে তুলেও নেয়। তবে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব রেলপথ পরিদর্শকের।