বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং নিয়ে কথা বলাই উচিত নয় : শিক্ষা উপমন্ত্রী

87

বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে র‌্যাংকিং হয় তা নিয়ে বাংলাদেশে কথা বলা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
নওফেল বলেন, “র‌্যাংকিং নিয়ে আমাদের আলোচনা করাই উচিত না বলে মনে করি। এটা আমাদের আদর্শের সাথে যায় না। কারণ আমাদের উচ্চশিক্ষাটা রাষ্ট্র কর্তৃক ভর্তুকিপ্রাপ্ত। আমার উচ্চশিক্ষা পুঁজিভিত্তিক নয়। তাই পশ্চিমা বিশ্বের যে র‌্যাংকিং হয় ওগুলোর সাথে আমাদের তুলনা উচিত হবে না। সেটা একটা ‘এলিটিস্ট’ মডেল।” খবর বিডিনিউজের
গত মে মাসে ‘টাইমস হাইয়ার এডুকেশন’ নামে লন্ডনভিত্তিক একটি প্রকাশনা ও র‌্যাংকিং সংস্থা ২০১৯ সালের এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করে। তালিকায় এশিয়ার ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকলেও বাংলাদেশের অনুমোদিত ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটির স্থান হয়নি। ওই তালিকা প্রকাশের পর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে আবারও সমালোচনা শুরু হয়।
উন্নত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার ব্যয়ের কথা তুলে ধরে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, “সেই সক্ষমতা কি আমার আছে? আমার দর্শনও তো আলাদা। তাহলে কেন আমি আশা করব, আমার বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিংয়ে যাবে। আমার তো সেই আলোচনা করাও শুধু মুখরোচক ‘সেনসেশন’ ছাড়া আর কিছু না।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিংয়ে আসে নাই। আমার কথা হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার প্রয়োজন মেটাচ্ছে তো, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আমার প্রয়োজন মেটাচ্ছে তো? তো কোথাকার কোন র‌্যাংকিং পত্রিকা কি র‌্যাংকিং করল, সেটা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা পর্যন্ত গড়ায়। তাই আসলে আমি মনে করি, আমাদের গণমাধ্যমের এটি রং পয়েন্ট।”
নওফেল বলেন, “আজকের পুঁজিবাদী সমাজে যেভাবে পুঁজির বিকাশ ঘটছে, যেভাবে শ্রেণির বিকাশ ঘটছে, সেই বাস্তবতায় যেই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে; সেই শিক্ষাব্যবস্থায় যে কাঠামো দাঁড়িয়েছে আমাকে সেই কাঠামোর মধ্য থেকেই কীভাবে আমরা ন্যূনতম সাম্য বজায় রাখতে পারি সেইটা চিন্তা করতে হবে। “একেবারে আমার একমুখী করবার যে লক্ষ্যটা, আমার আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কতটুকু সম্ভব হবে সেইটা উপলব্ধি করেই আমরা সুনির্দিষ্ট পন্থা নেব।”
সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক আজিজুর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক শেখ আব্দুস সালাম, কাবেরী গায়েন প্রমুখ।