বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৬০০ ছাড়িয়েছে

17

আড়াই মাসে মহামারীর আকার পাওয়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের ১১৮টি দেশ ও অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সোয়া লাখে, মৃতের সংখ্যাও ৪ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের সব দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কয়েকটি বিশেষ ক্যাটাগরির বাইরে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশের নাগরিকদের ভিসা স্থগিত করেছে ভারত সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে মহামারী ঘোষণা করার পর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারে। বড় ধরনের পতন ঘটেছে অধিকাংশ শেয়ার সূচকে।
করোনাভাইরাইসের কারণে এমনিতেই চাপে থাকা এয়ারলাইন্সগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ফলে বড় ধরনের সমস্যায় পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আরও নতুন নতুন দেশ ও এলাকায় স্কুল বন্ধের মত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকারগুলো। বাংলাদেশ স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত এখনও না নিলেও প্রতিদিনের অ্যাসেম্বলি মাঠের বদলে ক্লাসরুমে করার নির্দেশ দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫১৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬০৭ জনের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে চীনে, তবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশটি নানা ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি সামলে ওঠার পর এখন সংক্রমণ বাড়ছে ইউরোপ, আমেরিকায়। খবর বিডিনিউজের
পরিসংখ্যানে কভিড-১৯
পরিসংখ্যাণে দেখা গেছে, চীনের মূল ভূখন্ডে ৮০ হাজার ৯৮০ জন আক্রান্ত, ৩ হাজার ১৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের বাইরে ৪৩ হাজার ৫৩৯ জন আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৪৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বজুড়ে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৫১৯ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ৪ হাজার ৬০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের বাইরে মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে ৮২৭, ইরানে ৩৫৪, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬৬, ফ্রান্সে ৪৮, স্পেনে ৪৭, যুক্তরাষ্ট্রে ২৯, জাপানে ১৫, ইরাকে ৭, যুক্তরাজ্যে ৬, নেদারল্যান্ডস এ ৫, সুইজারল্যান্ডে ৪, জার্মানিতে ৩, হংকং এ ৩, অস্ট্রেলিয়ায় ৩, সান মারিনোতে ২, কানাডায় ১, মিশরে ১, লেবাননে ১, থাইল্যান্ডে ১, ফিলিপিন্সে ১, তাইওয়ানে ১, আয়ারল্যান্ডে ১, ইন্দোনেশিয়ায় ১, আর্জেন্টিনায় ১, পানামায় ১, বুলগেরিয়ায় ১, মরক্কোতে ১ এবং অন্যান্য দেশে ৭ জন।
ডিসেম্বরের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা ধরা পড়ে। সেই হুবেই প্রদেশে বুধবার নতুন রোগীর সংখ্যা আবার এক অংকের ঘরে নেমে এসেছে।
চীনের মূলভূখন্ডে বুধবার নতুন করে ১৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যাদের মধ্যে আটজন হুবেই প্রদেশের। তাদের নিয়ে চীনে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৯৮০ জনে।
দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬২ হাজার ৭৯৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, যা মোট সংক্রমণের প্রায় ৮০ শতাংশ। বুধবার আরও ১১ জনের মৃত্যু হওয়ায় চীনের মূলভূখন্ডে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৬৯ জনে। আর ১৪৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে।
চীনের পর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইউরোপের দেশ ইতালিতে। সেখানে ১২ হাজার ৪৬২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৮২৭ জনের। এছাড়া ইরান ৩৫৪ জন, দক্ষিণ কোরিয়া ৬৬ এবং ফ্রান্সে ৪৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস।