বিভাগীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল আজ

13

ক্রীড়া প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্ট ২০২৩ এর তৃতীয় দিনে তৃতীয় দিনে ছেলেদের বিভাগে ২টি এবং মেয়েদের বিভাগে ২ টি সেমিফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ১ম সেমিফাইনালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর মডেল সপ্রাবির এটাকিং মিডফিল্ডার সামিয়া আক্তারের একক নৈপুন্যে ৫-০ গোলে খাগড়াছড়ি জেলার বড়পাড়া সপ্রাবিকে পরাজিত করে টুর্নামেন্টের ১ম দল হিসেবে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। সামিয়া আক্তার টুর্নামেন্টের তৃতীয় হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। টুর্নামেন্টের মহিলা বিভাগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খুদে ফুটবল জাদুকর ১১ গোল করে গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
২য় সেমিফাইনালে রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার পানছড়ি সপ্রাবি ৪-২ গোলে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার খিরাইকান্দি ইমাম উদ্দিন সপ্রাবিকে পরাজিত করে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বিজয়ী দলের পক্ষে নমিতা চাকমা হ্যাটট্রিক করে, টুর্নামেন্টের মহিলা বিভাগে খুদে এই ফুটবল জাদুকর ১১ গোল করে গোলদাতার তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সামিয়া আক্তারের সাথে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন। বিজয়ী দলের পক্ষে অন্য গোলটি করেন জয়ন্তী চাকমা। বিজিত দলের পক্ষে আফরিন দুই গোল করে। আজ সকাল ৮.৩০টায় ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ১ম সেমিফাইনালে চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার কুমুরুয়া সূর্য রায় নন্দী সপ্রাবির এটাকিং মিডফিল্ডার মো. নুরুন্নবীর একক নৈপুন্যে ৫-২ গোলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার কসবা উপজেলার কসবা সপ্রাবিকে পরাজিত করে বালক বিভাগে ১ম দল হিসেবে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বিজয়ী দলের পক্ষে মো: নুরুন্নবী হ্যাটট্রিকসহ ৪ গোল করে। টুর্নামেন্টের বালক বিভাগে খুদে এই ফুটবল জাদুকর ৮ গোল করে গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। দলের পক্ষে অন্য গোলটি করে নাহিদ। বিজিত দলের পক্ষে জুরায়েদ ও রিহাদ একটি করে গোল করে।
২য় সেমিফাইনালে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার ঝলম সপ্রাবি ৩-১ গোলে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার জালিয়াঘাটা সপ্রাবিকে পরাজিত করে বালক বিভাগে ২য় দল হিসেবে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বিজয়ী দলের পক্ষে সাব্বির হোসেন, আল সামির ও ফরহাদ হোসেন প্রত্যেকে ১টি করে গোল করে। বিজিত দলের পক্ষে মোবারেক হোসেন সিরাজী সান্তনাসূচক গোল করে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয়ার্ধের ৮ মিনিটে ৩য় গোল হজম করার পর রেফারির সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় বাঁশখালী। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে রেফারি শেষ বাঁশি বাজিয়ে মাঠ ছেড়ে যান।
এরপর বাধে তুলকালাম কান্ড। মাঠ ছেড়ে রেফারিরা বেরোনোর সময় রেফারিদের লক্ষ্য কওে অশ্রাব্য গালিগালাজ চলে। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী, রেফারিরা স্টেডিয়ামের বাইরে আসার সাথে সাথে এক ব্যক্তি ফ্লাইং কিক মারে। সাথে সাথে বাঁশখালীর ক্ষুদে ফুটবলাররাও রেফারিদেও উপর আক্রমনে সামিল হয়। এক সংগঠক জানান, পিচ্চিদের আক্রমন দেখে মনে হচ্ছিল যেন ডিস্কভারি টেলিভিশনের অনেকগুলো নেকড়ে মিলে একটি গরুকে আক্রমন করার মত। অসহায় রেফারিদের একজন কোনমতে বের হয়ে মাত্র একশ’ গজ দুরে অবস্থিত সমিতির অফিসে খবর দিলে সেখানের অবস্থানরত রেফারিরা ছুটে এসে পাল্টা হামলা চালায়। এসময় সামনেই জিমনেশিয়ামে অবস্থানরত নির্বাচন কমিশনের পুলিশ ছুটে এলে গন্ডগোলকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ফ্লাইং কিক মারা সেই মার্শাল আর্ট হিরোকে আটক করলেও বাঁশখালী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল ও জালিয়াঘাটা সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মুছলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। জানা গেছে, বাঁশখালীর কর্মকর্তাদের নিবৃত করার জন্য ২০ হাজার টাকা দেন সিজেকেএস সহসভাপতি এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল। পরে রেফারিদেরকে ডেকে সমিতির সভাপতি আ জ ম নাছির উদ্দীন শাসিয়ে সতর্ক করে দেন বলে জানা গেছে।
আজ সকাল ৯.৩০টায় ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলায় উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হৃষীকেশ শীল, বিভাগীয় শিক্ষা অফিসার মামুন কবির, চাঁদপুর জেলার সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মো. রবিউল হোসেন, চট্টগ্রাম ও পটিয়া পিটিআইয়ের ইন্সট্রাক্টর ফারুক হোসেন, শামীমা সুলতানা, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সানাউল্লাহ কাউছার, রঞ্জন ভট্টাচার্য্য, জিশা চাকমা, লায়লা বিলকিস। চটগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, খেলা পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের আজাদ ইকবাল পারভেজ, সমীত সেন, মোহাম্মদ ওবাইদুল্লাহ, সৌমেন পাটোয়ারী, রুমা বড়ুয়া, সানজিদা আজাদ, হাবিবা ফেরদৌস আরা খানম, রাশেদা আক্তার, মো. আব্দুল হাই, বিষু বড়ুয়া, মো. ফরিদুল ইসলাম, উৎপল বড়ুয়াসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। খেলা পরিচালনার তত্ত্বাবধানে ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনীত প্রতিনিধিবৃন্দ এবং খেলা পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম রেফারী সমিতির সদস্যবৃন্দ।