বিপিসির বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল

67

বাতিল করা হয়েছে তেল স্থাপনায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। এতে করে কয়েক লাখ টাকা গচ্ছা দিতে হচ্ছে পেট্রোলিয়াম খাতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিপিসিকে। নগরীর পতেঙ্গাস্থ গুপ্তখাল এলাকার পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড-এর ডিপোতে ১৭ ডিসেম্বর রাতে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এটি স্থগিত করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জানা যায়, বিজয় দিবসকে সামনে রেখে এবার ঝাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। গত ৪ ডিসেম্বর বিপিসির অধীনস্থ কোম্পানিগুলোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করে। সভায় জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও জ্বালানি সচিবকে উপদেষ্টা এবং বিপিসি চেয়ারম্যান সামছুর রহমানকে আহবায়ক করে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি ১০টি উপ-কমিটিও গঠন করা হয়। দিবসের কর্মসূচির মধ্যে ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় গুপ্তখালস্থ পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড এর প্রধান স্থাপনায় বিপিসি ও অধীনস্থ কোম্পানিগুলোর পরিবারবর্গের সন্তানদের অংশগ্রহণে রচনা এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নৈশভোজের আয়োজন রাখা হয়। পরবর্তীতে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপোটি একটি কেপিআই (কী পয়েন্ট ইনস্টলেশন- জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা) স্থাপনা হওয়ার কারণে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আঁখি আলমগীরের গান গাওয়ার কথা ছিল। এজন্য শিল্পী ও সহশিল্পীদের মোটা অংকের বুকিং ফিও অগ্রিম পরিশোধ করা হয়েছে।’
অন্যদিকে ডেকোরেশন উপ-কমিটির আরেক সদস্য বলেন, ‘গুপ্তখালে পদ্মা অয়েলের ডিপোতে বড় সামিয়ানা তৈরি করা হয়েছে। ডেকোরেশনের দায়িত্বে ছিল ‘হাজী সাহাবুদ্দিন ডেকোরেটার্স। যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ হওয়ার পর অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন ডেকোরেটার্সের পুরো বিল পরিশোধ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানের আপ্যায়ন উপ-কমিটির সদস্য ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. এয়াকুব বলেন, ‘আমি যমুনা অয়েল কোম্পানির ডিপোগুলো পরিদর্শনের কাজে ছিলাম, শুক্রবার এসেছি। আজ (শনিবার) শুনেছি বিপিসির অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটিতে বিপিসিসহ আওতাধীন তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের পরিবার-পরিজনের দাওয়াত ছিল। প্রায় ৫ হাজার মানুষের নৈশভোজের ব্যবস্থা ছিল।’
এ বিষয়ে কথা হলে ডেকোরেশন উপ-কমিটির আহবায়ক ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর সাইফুল্লাহ আল খালেদ পূর্বদেশকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বিপিসির। আমাদের সহযোগিতার জন্য সংযুক্ত করা হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।’ কর্মসূচি প্রণয়নের আগে ‘কেপিআই’ স্থাপনার বিষয়টি কেন বিবেচনায় রাখা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা বিপিসির সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান। বিপিসি-ই অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে। এখানে আমরা সহযোগী মাত্র।’
জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান ও বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক মো. সামছুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, ‘পদ্মা অয়েল ডিপোটি একটি কেপিআই স্থাপনা। যে কারণে নিরাপত্তার কথা উঠায় আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। ১৯-২০ তারিখের দিকে অন্য যেকোনো ভেন্যুতে আমরা কর্মসূচিটি পালন করবো।’