বিপিএলের শেষ চার ঢাকাকে নিয়েই

46

শেষ পাঁচ ম্যাচে টানা হারে শেষ চারের সমীকারণটা বেশ জটিল হয়ে উঠেছিল ঢাকা ডায়নামাইটসের জন্য। শেষ চারের টিকেট নিশ্চিত করতে হলে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে জয় ভিন্ন কোনো পথই ছিল না সাকিব আল হাসানের দলের সামনে। শেষ পর্যন্ত বাঁচা-মরার এই লড়াইয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গেল আসরের রানার্সআপরা। খুলনাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে ঢাকা।
ঢাকার এই জয়ের ফলে শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে গেল রাজশাহী কিংস। ঢাকার সমান ৬ ম্যাচে জয় পেলেও রান রেটের হিসাবে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
শনিবার মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে খুলনার কোনো ব্যাটসম্যানই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভার ব্যাটিং করলেও স্কোরকার্ডে ১২৩ রানের বেশি জমা করতে পারেনি খুলনা। জবাবে উপুল থারাঙ্গা, সুনীল নারাইন ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে চড়ে ৩১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ঢাকা।
১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তেড়েফুড়ে শুরু করেছিলেন ঢাকার দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও সুনীল নারাইন। থারাঙ্গা খানিকটা দেখেশুনে খেললেও ব্যাট হাতে খুলনার বোলারদের রীতিমতো শাসন করেন নারাইন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নাইনের ঝড় থামান মোহাম্মদ সাদ্দাম। আউট হওয়ার আগেই ১৩ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন উইন্ডিজের এই বোলিং অলরাউন্ডার।
নারাইনের বিদায়ে যেন তেঁতে ওঠে থারাঙ্গা। কিন্তু বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হাসেনি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ব্যাট। জ্বলে ওঠার আগেই তাকে সাজঘর দেখান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মিজানুর রহমান সাজঘরে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে রানের চাকায় কোনোরকম প্রভাব পড়তে দেননি ম্যাচসেরা থারাঙ্গা।
চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কাইরন পোলার্ডকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটুকু শেষ করেছেন নুরুল হাসান সোহান। পঞ্চম উইকেটে ৩৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তারা। ২৬ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান। ১৫ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন পোলার্ড। খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সাদ্দাম ও তাইজুল ইসলাম।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নেয় খুলনা। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই তারা হারায় ৩ উইকেট, ৩৩ রান করে। দ্বিতীয় ওভারে জুনায়েদ সিদ্দিককে (২) ফেরান রুবেল। পরের ওভারে ১৮ রানে ব্রেন্ডন টেলরকে আউট করেন সাকিব। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি খুলনা, ৮১ রানের মধ্যে ৬ ব্যাটসম্যানকে হারায়।
এরপর ডেভিড উইজের সঙ্গে ইনিংস সেরা ২৯ রানের জুটি গড়েন তাইজুল ইসলাম। শেষ দুই ওভারে আরও তিন উইকেট হারায় তারা। মোহাম্মদ সাদ্দাম ও উইজ শেষ দুই বলে রানআউট হন। উইজ ইনিংস সেরা ৩০ রান করেন ২৭ বল খেলে।
২৪ রানের দ্বিতীয় সেরা পারফরম্যান্স করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ (১৪), তাইজুল (১২) ও সাদ্দাম (১২) দুই অঙ্কের ঘরে রান করেন। ঢাকার পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন সাকিব ও রুবেল। একটি করে পান কাজী অনিক ও সুনীল নারিন।