বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ২৮ নভেম্বর থেকে গণশুনানি

27

গ্যাসের পর এবার বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর ওপর গণশুনানি শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে এই গণশুনানি শুরু হবে। গতকাল সোমবার বিইআরসির সদস্য (বিদ্যুৎ) মিজানুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানতে চাইলে বিইআরসির সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। এসব প্রস্তাব গ্রহণ করার পর ২৮ নভেম্বর থেকে গণশুনানির তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। শুনানি শেষে সবার মতের ভিত্তিতে মূল্যের বিষয়ে ঘোষণা দেবে কমিশন।-খবর বাংলা ট্রিবিউনের
সর্বশেষ, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রাহক-পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়। তখন ইউনিট প্রতি ৩৫ পয়সা বা পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ হারে মূল্য বাড়ানো হয়। যা একই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। কিন্তু ওই সময় পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়নি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ বাড়ানো হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চে তিনদিনের গণশুনানি শেষে ১ জুলাই থেকে গ্যাসের নতুন মূল্যের ঘোষণা দিয়েছিল কমিশন।
কমিশন সূত্র জানায়, ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত পিডিবি প্রস্তাবিত পাইকারি মূল্যহার পরিবর্তনের ওপর গণশুনানি হবে। এরপর দুপুর ২টা থেকে বিকের ৫টা পর্যন্ত পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) প্রস্তাবিত সঞ্চালন মূল্যহার পরিবর্তন নিয়ে শুনানি হবে।
এরপর ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে গ্রাহক-পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর জন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবিত দামের ওপর শুনানি। প্রথম দিন (১ ডিসেম্বর রবিবার) সকাল ১০টায় শুরু হবে পিডিবির গ্রাহক-পর্যায়ের মূল্যহার পরিবর্তনের ওপর শুনানি। একইদিন দুপুর ২টায় শুরু হবে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) শুনানি। ২ ডিসেম্বর সকালে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) এবং দুপুরে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) শুনানি। এরপর ৩ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) এবং দুপুরে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) গ্রাহক-পর্যায়ের মূল্যহার পরিবর্তনের ওপর গণশুনানি।
বিইআরসি জানায়, পিডিবি পাইকারি ও খুচরা, পিজিসিবি সঞ্চালন মূল্যহার ও সব বিতরণ কোম্পানি বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার পরিবর্তনের জন্য কমিশনে আবেদন জমা দিয়েছে। আবেদন পাওয়ার পর কমিশন গণশুনানির এই তারিখ নির্ধারণ করেছে। শুনানির বিষয়ে কোনও অভিমত বা লিখত বক্তব্য দিতে চাইলে আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে কমিশনে নাম তালিকাভুক্তি করতে হবে।
সবার আগে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য পরিবর্তনের আবেদন করে পিডিবি। গত ২৩ অক্টোবর তারা এই আবেদন কমিশনের কাছে জমা দেয়। আবেদনে পিডিবি জানায়, আগামী ২০২০ সালে বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সময় প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা পূরণে মূল্য সমন্বয় করতে কমিশনের কাছে অনুরোধ জানায়। একইভাবে তারা জানায়, প্রস্তাবিত পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হলে খুচরা মূল্যের ওপর কমিশনের আইন অনুযায়ী সমন্বয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে।
একইসঙ্গে গ্রাহক-পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয় ডেসকো, ডিপিডিসি, নেসকো, আরইবি ও ওজোপাডিকো। সঞ্চালন চার্জ সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয় পিজিসিবিও। বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের আবেদনে কত মূল্য বাড়ানো হবে এমন কিছু উল্লেখ না করে বিভিন্ন পরিচালন-ব্যয় বৃদ্ধি বিবেচনায় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার বাড়ালে যে হারে পাইকারি মূল্যহার বাড়বে, সেভাবে কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের খুচরা মূল্য বাড়ানোর বিষয়টি কমিশনের বিচেনার অনুরোধ জানায় তারা।