বিদেশি ট্রলার কোন উদ্দেশ্যে ঢুকেছে তদন্তে কমিটি গঠন

49

ক্যামেরুনের পতাকাবাহী মাছ ধরার ট্রলার দুটি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু। এই ট্রলার দু’টির বাংলাদেশে ঢোকার অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তার তদন্ত এবং এগুলোকে কি করা হবে, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গতকাল রবিবার সচিবালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘এফভি সি উইন্ড’ ও ‘এফভি সি ভিউ’ নামে ফিশিং ভেসেল দু’টি গত ২১ আগস্ট থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টিনেন্টাল মেরিন ফিশারিজের জেটিতে রয়েছে। খবর বিডিনিউজের
এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ‘মাছধরার অবৈধ জালভর্তি জাহাজ দু’টির স্থানীয় এজেন্ট ইন্টারমোডাল প্রাইভেট লিমিটেড মেরামতের অজুহাত দেখিয়ে সম্পূর্ণ ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে ২১ আগস্ট জেটিতে প্রবেশ করায় এবং ২৬ আগস্ট বন্দরত্যাগের কথা জানালেও এখনও জাহাজ দু’টি বাংলাদেশি জলসীমা ত্যাগ করেনি’।
বন্দরে মৎস্য অধিদপ্তরের পরিদর্শনের সময় মাছ ধরা এই ট্রলার দু’টি দেখার পর এগুলোর বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু হয়। তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ‘জাহাজ দু’টির কাগজপত্রে ব্যাপক ত্রুটিসহ কাটাকুটি করে পোর্ট ক্লিয়ারেন্স পরিবর্তন করা হয়েছে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দর এবং কোস্টগার্ডের সরেজমিন তদন্তে জাহাজ দু’টিতে মেরামতযোগ্য কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি’।
২৬ আগস্ট ট্রলার দু’টির কম্বোডিয়ায় রওনা হওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে এখনও অবস্থান করায় সভায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। ত্রুটিপূর্ণ এবং সন্দেহযুক্ত কাগজপত্রের উপর ভিত্তি করে জাহাজ দু’টিকে বন্দরে ভেড়ার ছাড়পত্র দেওয়ায় জড়িত কাস্টম কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। এছাড়াও জাহাজ দু’টির সঠিক তথ্য ও মোটিভ নিরূপণের জন্য আজ সোমবারের মধ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী খসরু বলেন, ট্রলার দু’টি মিথ্যা ডিক্লারেশন দিয়ে ঢুকেছে এবং তা তদন্ত করে ধরা হয়েছে। সবার সিদ্ধান্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি সোমবার অথবা মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে এবং কমিটির সদস্য সংখ্যা ৭ থেকে ৯ জন হতে পারে। ট্রলার দু’টি কোন দেশের- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরুনের পতাকা নিয়ে তারা ঢুকেছে, তবে সেই দু’টি পতাকাও নামিয়ে ফেলেছে।
ট্রলার দু’টি থেকে নিরাপত্তাগত কোনো হুমকি নেই জানিয়ে খসরু বলেন, ‘যখন আমরা জানতে পেরেছি, তখন আমরা ট্রলার দু’টি যাতে মুভমেন্ট না করতে পারে এবং কোনো কিছু যাতে আনলোড করতে না পারে, তার ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতি জাহাজে ৮ জন করে নাবিক ছিল। কি ছিল, তা পরিষ্কার না। তবে কিছু নেট বা জাল রয়েছে’। মেরামতের কথা বলে বন্দরে ভেড়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে তারা এটা চাইতে পারে। তবে মেরামতের কথা বললেও জাহাজে কোনো ত্রুটি ছিল না। কোন উদ্দেশ্যে তারা ঢুকেছে, তা তদন্ত করতেই আমরা কমিটি গঠন করতে যাচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে যদি কোনো মাছ ধরার ট্রলার মেরামতের কথা বলে বা যে কোনো কথা বলে বাংলাদেশে ঢুকতে চায়, তখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে তা জানাতে হবে। তখন আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।