বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

26

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর। এদিন মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বের ইতিহাস শুরু হয় এবং মুক্তি সংগ্রাম নতুন মাত্রা পায়। মুক্তিবাহিনীর সর্বাত্মক হামলায় পাকিস্তানি হানাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের বেশে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। তারা একের পর এক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত করে পাক সেনাদের ফাঁদে ফেলেন। পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ।
মিত্রবাহিনীর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে সম্মুখযুদ্ধে এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনী মিয়াবাজারে পাকসেনাদের ওপর হামলা চালায় ও মিয়াবাজার দখল করে নেন। আখাউড়ার আজমপুর স্টেশনে দুই পক্ষই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দিনভর যুদ্ধ চালিয়ে যায়।
এদিন পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতের বিমানবাহিনীর স্থাপনাসমূহ ও রাডার স্টেশনসহ অমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগর, যোধপুর ও আগ্রার বিমানবন্দরগুলোতে আকস্মিক বোমাবর্ষণ করে সর্বাত্মক যুদ্ধের সূচনা করে। কলকাতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ঠিক তখনই খবর এলো : পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করেছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, আগ্রাসহ সব জায়গায়। এরপর ভারতের যুদ্ধ ঘোষণা। মুক্তিফৌজের পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে মধ্যরাত ঢাকার নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে এবং চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় গুপ্তখালি এলাকার বিমানের তৈল সংরক্ষণাগারে আকস্মিক আক্রমণ করে। এ আক্রমণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঐতিহাসিক অধ্যায়ে পদার্পণ করে এবং পাকবাহিনীর মারাত্মক ক্ষতি সাধনে সক্ষম হয়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম ও ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ এ অভিযান পরিচালনা করেন।
বিবিসির সংবাদে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী কর্তৃক আক্রমণের সংবাদটি প্রচার করা হয় এবং সমগ্র পৃথিবী এ যুদ্ধের খবর সম্পর্কে অবহিত হয়।