বিক্ষোভ ঠেকাতে কাশ্মির অচল করে দিলো ভারতীয় বাহিনী

83

পূর্ব নির্ধারিত মিছিল কর্মসূচি ঠেকাতে কাশ্মিরকে কার্যত অচল করে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। শনিবার পুলিশের গুলিতে ৭ বেসামরিক নিহতের প্রতিবাদে সেনা সদর দফতর অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ছিল সোমবার। আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, বিক্ষোভের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে বিভিন্ন সড়ক ও দোকান বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী নেতাকে।
কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কেউ কেউ পাকিস্তানের অঙ্গীভূত হওয়ার পক্ষে হলেও কেউ কেউ আবার সরাসরি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরের জাতিমুক্তি আন্দোলনকে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী তৎপরতা থেকে আলাদা করতে নারাজ। সন্দেহভাজন জঙ্গি নাম দিয়ে বহু বিদ্রোহীর পাশাপাশি বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। বিদ্রোহীদের সমর্থনে তরুণদের রাজপথে নামার প্রবণতা দিনকে দিন বাড়ছে। নিরাপত্তা অভিযানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহী হত্যার সা¤প্রতিক ঘটনাগুলোতে অতীতের তুলনায় প্রতিবাদ জোরালো হতে দেখা গেছে।
শনিবার এমনই এক বিক্ষোভের সময় পুলিশের গুলিতে সাত বেসামরিক নিহত হয়। এতে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কাশ্মিরবাসী। চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সেনা সদর দফতর অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, সেই মিছিল কর্মসূচি ঠেকাতে সেনা সদর দফতরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে শ্রীনগর ও আশেপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন রাস্তাতেও। এইসব এলাকায় দোকানপাট, সরকারি অফিস ও ব্যাংক বন্ধ রাখা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল। মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাই কেবল নয়, ট্রেন ও গাড়ি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি চলছে আটক অভিযান। রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সোমবার বিদ্রোহী নেতা মোহাম্মদ ইয়াসিন মালিক ও মিরওয়াইজ উমর ফারুককে আটক করা হয়েছে।
কাশ্মিরের প্রধান শহর শ্রীনগরের সেনা সদর দফতরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আরেক বিদ্রোহী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। আটক করে পুলিশের গাড়িতে ওঠানোর সময় মোহাম্মদ ইয়াসিন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় সেনারা কাশ্মিরিদেরকে হত্যা করছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই তারা হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘পরিস্থিতি স্থিতিশীল’ হলে মালিক ও ফারুককে মুক্তি দেওয়া হবে। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছ থেকে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। রবিবার রাতের এক সেনা-বিবৃতিতে বিক্ষোভরতদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘জাতীয় বাহিনীবিরোধী এসব নকশার ফাঁদে না পড়ার জন্য জনগণকে পরামর্শ দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এটি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দেওয়ার প্রচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।’