বিএস খতিয়ানকে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ নামকরণের প্রস্তাব

31

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ও কীর্তিমান পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ছিল গত ১৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধুর জন্মের এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক লায়ন আহসানুল করিম প্রচলিত বিএস খতিয়ানের নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন।
এসংক্রান্ত এক বিবৃতিদে আহসানুল করিম বলেন, নতুন দিগন্তের বার্তা নিয়ে এসেছে ২০২০ সাল। শুরু হওয়া বছরটিকে এবার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি বছর হিসেবেই মনে করছেন সকলে। গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুজিব শতবার্ষিকী শুরু হয়েছে। ফলে ১৭ মার্চ ২০২০ সাল থেকে ২৬ মার্চ ২০২১ সাল পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে মুজিববর্ষ। নানা উন্নয়ন ও গঠনমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে। শুধু বাংলাদেশে নয়, ইউনেস্কোর সদস্যভুক্ত ১৯৫টি দেশে একযোগে পালিত হবে মুজিববর্ষ। বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিনে গোটা জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে জাতিসত্তা পরিচয়ের চূড়ান্ত রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন। যাঁর জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মায়ের নাম সায়েরা খাতুন। লুৎফর-সায়েরা দম্পতির এ সন্তানই পরে এ দেশের মানুষের পরাধীনতা মুক্তির ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন। টুঙ্গিপাড়ার খোকা থেকে হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কুল জীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কৈশোরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকাবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন। ম্যাট্রিক পাসের পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের মতো রাজনীতিকের সান্নিধ্যে আসেন। এ নেতাদের সাহচর্যে তিনি নিজেকে ছাত্র-যুব নেতা হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ছোট-বড় সবার প্রিয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর নেতৃত্বে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় একটি স্বাধীন দেশ, একটি পতাকা ও নির্দিষ্ট ভূখন্ড।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতিসত্তাকে অমরত্ব দানকারী, বিশ্ব মানচিত্রে বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভূ-খন্ডের রূপকার। মানবিক, হিংস্র উগ্রজাতীয়তাবাদ, সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিপ্লবী কণ্ঠস্বর আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। বিশ্বময় বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশি জনগণের জন্য এই অদ্বিতীয় ও মাঙ্গলিক দিনে এই মহামানবকে গভীর শ্রদ্ধাভারে স্মরণ করছি। বাঙালি জাতির এই বিশেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আমাদের প্রাণাধিক প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সমস্ত ভূমিকে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি একক মূল খতিয়ানে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব করছি। অর্থাৎ বিএস খতিয়ানের স্থলে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ হিসাবে বাংলাদেশের সকল ভূমিসমূহকে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকল পদস্থ কর্মকর্তাগণ দেশের প্রচলিত আইনের আলোকে বিবেচনা করে উক্ত প্রস্তাব বাস্তবায়নে সদয় পদক্ষেপ নিলে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে ও একনিষ্ঠ সাধনা-পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমানে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। তা ছাড়াও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন ও ভিশন ২০৪১ পা রেখে বাংলাদেশ আজ অবস্থান করছে এক অনন্য উচ্চতায়, যা বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। যদি বিএস খতিয়ানের স্থলে বঙ্গবন্ধু খতিয়ান নামকরণ করা হয় তা হলে উক্ত খতিয়ানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর এই নামটি ঘর থেকে ঘরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অনাধিকাল বেঁচে থাকবে আমাদের মাঝে এবং চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধামমন্ত্রী উক্ত প্রস্তাবনাটি সদয় বিবেচনা করে ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে যথাযথ নির্দেশ প্রদান করবেন এবং ‘বঙ্গবন্ধু খতিয়ান’ সৃষ্টি করে মুজিব শতবর্ষকে চিরস্মরণীয় করবেন। খবর বিজ্ঞপ্তি