বিএনপির পাঁচজনকে নির্বাচিত দেখানো হয়েছে : মঈন খান

43

একাদশ সংসদ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগকারী বিএনপির নেতা আবদুল মঈন খান বলেছেন, ওই নির্বাচনে প্রকৃত অর্থে কোনো ভোট হয়নি, তাদের পাঁচজনকে নির্বাচিত দেখানো হয়েছে। ওই ‘ভোট জালিয়াতির’ মধ্য দিয়ে আসা সরকারকে গ্রহণযোগ্য করতেই এখন গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের চা চক্রের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকাল রবিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচনের প্রহসন আমরা দেখেছি, তার মাধ্যমে আমরা এদেশে যে একটি প্রহসনের সংসদ দাঁড় করিয়েছি এবং যে সংসদের মাধ্যমে এদেশে একটি নতুন করে সরকারও গঠিত হয়েছে। সেই সরকারের সত্যিকারের অবস্থান কোথায়- সেটা আমরা যদি নাও জানি, সরকার নিজে কিন্তু ঠিকই জানে। আর নিজে ঠিকই জানে বলেই আজকে সরকার ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে কিভাবে তাদের এই যে প্রহসনের সরকার, সেই সরকারকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায়। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করার এই যে প্রচেষ্টা, সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছে’।
ওই নির্বাচন আসলে ‘কোনো নির্বাচনই হয়নি’ বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এটা হচ্ছে একটা প্রহসনের নির্বাচন। একটা ভুয়া নির্বাচন’। খবর বিডিনিউজের
গত ৩০ ডিসেম্বর ২৯৮ আসনে নির্বাচনে পাঁচটিতে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হন। তাদের জোটসঙ্গী গণফোরামের দুই নেতাও নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে শপথ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এই প্রসঙ্গ তুলে মঈন খান বলেন, ‘আমাকে কয়েকজন রাষ্ট্রদূত প্রশ্ন করেছিলেন, আচ্ছা বিএনপির তো পাঁচজন নির্বাচিত হয়েছেন, পরে আরেকজন নির্বাচিত হয়েছেন। আমাকে যখন রাষ্ট্রদূতরা জিজ্ঞাসা করেছেন তখন পাঁচজন নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাহলে সেই পাঁচজন কি সংসদে যাবে না? আমি বললাম, কেউ যদি নির্বাচিত হয় সংসদে যাবে না কেন? কিন্তু আপনারা (রাষ্ট্রদূত) কি জানেন না বিএনপির পাঁচজন তো নির্বাচিত হয়নি, তাদেরকে নির্বাচিত দেখানো হয়েছে। যাদের নির্বাচিত দেখানো হয়েছে তাদের সংসদে যাওয়ার কি রাইট আছে? সেই প্রশ্নের জবাব দেন তাহলে নিশ্চয় বিএনপির পাঁচজন সংসদে যাবেন’।
ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আসলে এই নির্বাচনে কে জয়ী কে বিজয়ী সেটা কোনো প্রশ্নই নয়। নির্বাচনে যাদেরকে জয়ী দেখানো হয়েছে তারা জয়ী হয়েছেন, এই নির্বাচনে যাদেরকে পরাজিত দেখানো হয়েছে তারা পরাজিত হয়েছেন এবং সেটা করা হয়েছে শুধু ভোট রিগিংয়ের মাধ্যমে নয়, এটা করা হয়েছে সন্ত্রাসের মাধ্যমে’।
আওয়ামী লীগ সরকার ‘মেগা প্রজেক্ট’ থেকে ‘মেগা দুর্নীতি’ করছে বলে অভিযোগ করেন সাবেকমন্ত্রী মঈন খান। জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে কোকোর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্মৃতি সংসদের শামীম তালুকদার, আলমগীর হোসেন, শাহিন খন্দকার, রেজাউল করীম রেজাসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।