হঠাৎ বেড়েছে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। নগর ও আশপাশের এলাকায় এ ধরনের রোগীর আধিক্য দেখা গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালসহ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারগুলোতে কয়েকদিন ধরে শিশু রোগী বেশি আসছে।
বেশিরভাগ শিশু ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহে আক্রান্ত। এ ছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীও ভর্তি হচ্ছে। চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে একশ এর অধিক। গতকাল বুধবার ওয়ার্ডটিতে ৪’শ জনের বেশি রোগী ভর্তি আছে বলে জানা গেছে। ফলে ওই ওয়ার্ডে এক শয্যায় একাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ছাড়া মেঝেতে চলছে অনেকের চিকিৎসা। আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি। খবর বাংলানিউজের
৪ দিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে দেড় বছর বয়সী আনিকা তাবাসসুম। গত সোমবার রাতে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আনিকা তাবাসসুমের মা আঞ্জুমা নাছরিন বলেন, স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে একদিন ওষুধ সেবন করিয়েছি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় এখানে নিয়ে এসেছি।
আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশু ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। শয্যা না থাকাতে অনেকে ভর্তি হতে না পেরে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নবজাতক ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে আক্রান্তদের সেরে উঠতে সময় লাগছে, তাই বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক ও চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভাইরাসজনিত এসব রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ঠিকমতো কাজ করছে না। এ ছাড়া শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ চিকিৎসায় বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
চমেক হাসপাতাল শিশু বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, শ্বাসতন্ত্রের রোগের মধ্যে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয় নিউমোনিয়ায়। এ রোগ সারতে অ্যামোক্সিসিলিন, কোট্রিমোক্সাজোল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, সেফট্রায়াক্সোনসহ একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় রোগীদের। কিন্তু নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় এসব অ্যান্টিবায়োটিক শতভাগ কাজ করছে না। ফলে রোগ সেরে উঠতে সময় লাগছে।
তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীর সুস্থ হতে ৩ থেকে ৮ দিন সময় লাগে। দ্রুত সেরে ওঠার জন্য আক্রান্তকালীন সময়ে শিশুকে ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। সবসময় গরম কাপড় পরিধান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নবজাতকদের ঘন ঘন বুকের দুধ দিতে হবে। ডায়রিয়া আক্রান্তকে খাবারের পাশাপাশি স্যালাইন পান করাতে হবে। এছাড়া খাবার গ্রহণের আগে হাত ধোয়া নিশ্চিত করার পাশাপাশি খাবার তৈরির ২ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়াতে হবে।