বাসা থেকে বাবা-মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

61

নগরীর বন্দর থানাধীন নিমতলা এলাকায় একটি বাসায় বাবা ও মেয়ে খুন হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে পুলিশ তাদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে। তাদের গলায় ছুরিঘাকাত করে খুন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নিহত ব্যক্তির স্ত্রী, শ্যালিকা ও শ্যালিকার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, স্ত্রী এই ঘটনায় জড়িত।
নিহত দুজন হলেন মো. আবু তাহের (৩৫) ও তার সাড়ে তিনবছর বয়সী মেয়ে ফাতেমা নুর। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বসুরহাট উপজেলার চরকাঁকড়া গ্রামে। আবু তাহের পেশায় গুদাম শ্রমিক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে নগরীর বন্দর থানার নিমতলা মোড়ে জনৈক শাহ আলমের ভবনে যায় পুলিশ। সেখানে নিচতলার বাসায় দু’জনের রক্তাক্ত মরদেহ পায় পুলিশ।
বন্দর থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী শনিবার বিকালে পূর্বদেশকে জানান, বাবা ও মেয়ের গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। বাবার মাথায় এবং পেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। এছাড়া বাসার ভেতর থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি ও রক্তভেজা ওড়না উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আবু তাহেরের স্ত্রী হাসিনা আক্তারের সম্পৃক্ততা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কারণ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। আমরা হাসিনা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। সন্দেহের তালিকায় আরো কয়েকজন রয়েছে। দেখা যাক কি হয়।
ওসি জানান, হাসিনা আক্তার তাদের জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মত শনিবারও সকাল ৮টার দিকে তিনি কাজে চলে যান।
আধ ঘণ্টা পর নয়টার দিকে বাসায় এসে দেখেন, বাসার ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। দরজা খুলে দেখেন তার স্বামীর লাশ বাসার মেঝেতে ও মেয়ের লাশ খাটের উপর পড়ে আছে। তার চিৎকারে লোকজন জড়ো হয়।
পুলিশ জানায়, আবু তাহের ও তার স্ত্রী হাসিনা আক্তারের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা ছিল না। এমনকি স্ত্রীকে মারধরও করতেন আবু তাহের। এতে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে খুন করা হতে পারে। এছাড়া এ ঘটনায় আবু তাহেরের শ্যালিকা ও তার স্বামীর কোন সম্পৃকতা রয়েছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
নিমতলা এলাকায় বাবা-মেয়ে খুনের এ ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর পরই বন্দর থানা পুলিশ, সিআইডি, পিআইবি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তারা হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এ খুনে সন্দেহের তীর নিহত আবু তাহেরের স্ত্রী হাসিনা আক্তারের দিকেই। পুলিশের ধারণা, একজনে এ হত্যাকান্ড ঘটায়নি। এতে কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে।
শাহ আলম ভবনের নিচ তলার একটি কক্ষে স্বামী-স্ত্রী ও মেয়ে বসবাস করতেন। আবু তাহের ছিলেন দিন মজুর। তিনি গুদামে কাজ করতেন। আর স্ত্রী হাসিনা আক্তার শাহ আলম ভবনে ঝি এর কাজ করতেন।
সিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম শনিবার সন্ধ্যায় পূর্বদেশকে বলেন, ওরা গরীর পরিবার। স্বামী দিন মজুর ও স্ত্রী লোকজনের বাসায় কাজ করতেন। কি কারণে এ হত্যাকান্ড তা পরিষ্কার নয়। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এটি নিয়ে কাজ করছে। অচিরেই রহস্য উদঘাটন হবে।