বার্লিনে লিবিয়া সম্মেলন ক্ষীণ আশার আলো

26

রবিবার জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত লিবিয়া সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হবে কিনা তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। এ নিয়ে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেটি ঢাকা টাইমস পাঠকদের জন্য তুলে ধর হলো- অনেকদিন ধরে জার্মানি বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে তার ভূমিকা পালনে হিমশিম খাচ্ছিলো। বা অন্যভাবে বললে বলা যায় যে, অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ ও ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হওয়া সত্তে¡ও জার্মানি দায়িত্ব পালন করতে পারছিল না। এই অবস্থায় রবিবার ফ্রান্স, রাশিয়া, তুরস্ক ও মিশরের প্রেসিডেন্টকে বার্লিনে স্বাগত জানান জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। ব্রিটেন ও ইটালির প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন সেখানে। যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আর আরব আমিরাত, ইইউ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন তাদের প্রতিনিধিদের বার্লিনে পাঠিয়েছিল।
আর লিবিয়ার দুই পক্ষ- জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রধান ফায়েজ এল-সারাজ ও লিবিয়ার একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়া খলিফা হাফতারও বার্লিনে উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কোনো কথা বলেননি। এর মধ্য দিয়েই আসলে লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। ২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। এর সমাধানে বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক অনেক পক্ষ যুক্তও হয়েছে। তবে তারপরও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের তুলনায় লিবিয়ার পরিস্থিতি কমই গুরুত্ব পেয়েছে।
লিবিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে অন্যদের চেয়ে জার্মানি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। কারণ ২০১১ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে লিবিয়া নিয়ে ভোটের সময় জার্মানি অনুপস্থিত ছিল। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে ভোট দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। ওই সময় ভোটদানে বিরত থাকায় জার্মানির অনেক সমালোচনা হলেও সেদিনের সেই সিদ্ধান্ত বর্তমানে সুবিধা হয়ে দেখা দিয়েছে।
ফলে জার্মানি সফলভাবে লিবিয়া সম্মেলন আয়োজন করতে পেরেছে। ইউরোপীয়রা নিজেদের স্বার্থেই চাইবে লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকুক। কেননা, উত্তর আফ্রিকা থেকে ইউরোপে শরণার্থীদের আসার প্রধান পথ এখন লিবিয়া। বছর চারেক আগে ইউরোপে আসা শরণার্থীদের ঢল এই অঞ্চলে পপুলিস্ট ও জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে উসকে দিয়েছিল। বাস্তবায়ন হওয়ার আগ পর্যন্ত বার্লিন সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো শুধু একটি কাগজ মাত্র। তবে কিছু না করার চেয়ে এটি ভালো।