বান্দরবানে মানববন্ধন

47

সংসদে সেনাবাহিনী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসাধারণকে জড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে খাগড়াছড়ির মহিলা এমপি বাসন্তী চাকমার পদত্যাগের দাবীতে বান্দরবানে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ। রবিবার বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে বাঙালি ছাত্র পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে শতাধিক নারী পুরুষ অংশ নেয়। এদিকে মানববন্ধনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি আতিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, খাগড়াছড়ি থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা সংসদে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রের গৌরব সেনাবাহিনী ও বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা মিথ্যা ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক। তার এই বক্তব্য পার্বত্য এলাকার শান্তির বিঘ্ন ঘটাবে, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের মদদ দিবে ও পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ। একজন এমপি এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হলে সে কখনো এলাকায় সমভাবে উন্নয়ন করতে পারে না। বরং এরা পার্বত্য এলাকার বিরাজমান শান্তি নষ্ট করার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করবে। তাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে আঘাত করে বাসন্তী চাকমা শপথের লঙ্ঘন করায় জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যের জন্য অবিলম্বে ক্ষমা প্রার্থনা ও পদত্যাগ না করলে পার্বত্য এলাকায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে।
বাসন্তী চাকমা একাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানের সময় পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাহাড়িদের উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে এবং পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী বাঙালিদের বহিরাগত উল্লেখ করে মহান সংসদে বাঙালিদের হেয় প্রতিপন্ন মূলক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রদান করে।
এদিকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমার বক্তব্যের প্রতিবাদ ও তার অপসারণ দাবীতে বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলায় মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে আলীকদম উপজেলা প্রেসক্লাব চত্বর ও লামা উপজেলা পরিষদ সম্মুখ সড়কে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সহস্রাধিক পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ গ্রহণ করেন। নাগরিক ফোরামের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে স্মারকলিপি পাঠ করেন, বিশিষ্ট মুরুং নেতা ইয়োংলক মুরুং ও লামা নাগরিক ফোরামের সদস্য মো. কামরুজ্জামান। এসময় বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক এম রুহুল আমিন, মুহাম্মদ কামালুদ্দিন, মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. আবুল কাশেম, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম, সাখাওয়াতুল ইসলাম, থুইনুমং মার্মা ও লুলাইং হেডম্যান সিংপাশ মুরুং প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে সাংসদ বাসন্তী চাকমার কুশ পুত্তুলিকা পোড়ানোর পর বিক্ষোভ মিছিল সহকারে লামা ও আলীকদম নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পৃথকভাবে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সংরক্ষিত আসনের নব নির্বাচিত মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ অধিবেশনে উগ্র সাম্প্রদায়িক এক বক্তব্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছেন। এ ধরনের বক্তব্য পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা মাত্র। এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, সাংসদ বাসন্তী চাকমা সরকারের প্রতিনিধিত্ব না করে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতিভূ হয়ে সেনাবাহিনী ও বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে এজেন্ডা বাস্তবায়নে নেমেছেন। এমনকি বাসন্তী চাকমার উস্কানিমূলক এ বক্তব্য রাষ্ট্রবিরোধী। তাই সা¤প্রদায়িকতার মাধ্যমে পাহাড়ে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে এমপি বাসন্তী চাকমাকে সংসদ সদস্য পদ থেকে অপসারণ করার দাবী করা হয়।