বান্দরবানে জি কে শামীমের বিলাসবহুল রিসোর্ট

86

বান্দরবান সদর উপজেলার মিলনছড়ি এলাকায় পাহাড়ি জমিতে বিলাসবহুল ‘সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’তে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম। প্রায় দুইশত কোটি টাকা বিনিয়োগের টার্গেট নিয়ে বান্দরবান শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক সড়কের মিলনছড়ি এলাকায় প্রায় ৫০ একর এলাকা জুড়ে বিলাসবহুল এই রিসোর্টটি তৈরি করা হচ্ছে।
পাঁচতারকা মানের রিসোর্টটিতে বিনিয়োগ দাঁড়াবে ২০০ কোটি টাকা আর এই রিসোর্টে রাইড অ্যামিউজম্যান পার্ক, ওয়াচ টাওয়ার, ওয়াটার রাইড ও গেম জোনসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হবে। এই রিসোর্টটিতে একসাথে ২৫০ জন পর্যটক থাকতে পারবে। আর ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি রিসোর্টটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বলে জানালেন রিসোর্ট সংশ্লিষ্ট লোকজন।
সম্প্রতি ঢাকায় অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে জিকে শামীমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এর পরপরই বেরিয়ে আসে নানান তথ্য। তবে গ্রেপ্তারের পরপরই যুবলীগ নেতা জিকে শামীমের অঢেল সম্পত্তির কিছু অংশের হদিস মেলে বান্দরবান পার্বত্য জেলায়। এর পরই তৎপর হয়ে উঠে প্রশাসন। এই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় পরপরই তার বিনিয়োগে বান্দরবানে নির্মাণার্ধীন রির্সোট এলাকার আশেপাশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বান্দরবান রুমা-থানচি সড়কের ৫ কিলোমিটার দূরত্বে মিলনছড়ি এলাকা। নির্জন আর গহীণ এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে ১৫ সাল থেকে জমি কিনে বিলাসবহুল সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা নামে একটি রিসোর্টের কাজ চলমান রয়েছে। মলনছড়ি মারমা সাইঙ্গা পাড়ার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে দলিল করে রির্সোটের স্বতাধিকারীদের নামে এই পর্যন্ত প্রায় কেনা হয়েছে ৫০ একরের মত পাহাড়ি জমি।কিন্তু জমি ক্রয় করার পর থেকে রির্সোটের নামে জমি দখল, ঝিড়ি ঝর্ণা দখল ও চলাচলের পথ দখলের অভিযোগ উঠে আসে।
স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সম্প্রদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে তারা এই মিলনছড়ি এলাকায় বসবাস করে আসলেও রিসোর্টের কাজ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন ভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এদিকে সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মন্টু জানান, পাহাড়ের জায়গা দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির স¤প্রদায়সহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে আমরা রিসোর্ট করার জন্য বান্দরবানে জমি কিনেছি। আমরা কাউকে ঠকাইনি ও কারো জমি দখল করিনি।
জানা যায়, রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলার ৮ জন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী একত্রে মিলে বিলাসবহুল এই সিলভান ওয়াই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার কার্যক্রম শুরু করা হয়। আর এই ব্যবসায়ীদের মধ্যে রিসোর্টের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মন্টু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর করিম চৌধুরী (স্বপন) আর পরিচালক হিসেবে রয়েছে সম্প্রতি ঢাকায় র‌্যাবের হাতে আটক যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম। রিসোর্টের কাজ শুরুর জন্য প্রথম পর্যায়ে এই শামীম প্রায় ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, পার্বত্য জেলার বাসিন্দা না হয়েও বহিরাগতরা কিভাবে বান্দরবানে জমি কিনছে? জমি কিনে খাস জমি দখল ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাফেরায় বাধা দিচ্ছে। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে। একজন কিনল ১৫ অথবা ২০ একর। অথচ তার ভোগ দখলে যদি অতিরিক্ত জমি পাওয়া যায় তবে তা অবৈধ।