বাধার মুখে বিএনপি

53

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাফর আলমসহ কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সরব হলেও বাধার মুখে প্রচারণায় নীরব রয়েছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট হাসিনা আহমেদ।
দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের গ্রামীণ এলাকা ও একটি পৌরসভার অলিগলি ছেয়ে গেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টারে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাইকিং করে বিরামহীন প্রচারণার পাশাপাশি মিটিং-মিছিল, গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কার্যক্রম চালালেও সেদিক দিয়েও কোনো দৃশ্যমান প্রচারণায় নেই বিএনপি প্রার্থী। বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ, ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হলেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন তাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। ফলে নির্বাচনের আগ মুহূর্তেও গত এক সপ্তাহ ধরে নিবাপত্তার অভাবে প্রচারণায় বেরুতে পারছেননা বিএনপি প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা। অপরদিকে এ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতাকর্মীরা সভাপতি-সম্পাদক, চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, কাউন্সিলর ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চারটি ইউনিটে বিভক্ত হয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চেয়ে নির্বাচনী মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন মহাজোটের শরীকদল জাতীয় পার্টিও। কক্সবাজার-১ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও মূলত: ভোট যুদ্ধ হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে। তারা হলেন- আ.লীগের নের্তৃত্বাধীন মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম এবং বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এ আসনের সাবেক সাংসদ এডভোকেট হাসিনা আহমেদ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার-১ সংসদীয় আসনটি চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার পঁচিশটি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনের বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯০ হাজার ৮২৯ জন। চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫৫০ জন। তৎমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪৮ হাজার ৯০১জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৪৯জন। অপরদিকে, পেকুয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ২৮৯ জন। তৎমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৫ হাজার ৬২৬ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ৫০ হাজার ৬৫৩জন।
এ সংসদীয় আসনে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৩৯টি। তৎমধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ৯৯টি এবং পেকুয়া উপজেলায় ৪০টি। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, চকরিয়া-পেকুয়ায় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদের স্ত্রী সাবেক সাংসদ এডভোকেট হাসিনা আহমেদ নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নামলেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। গণসংযোগ চালানোর সময় আ.লীগ নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের আসামি করে মামলা দিচ্ছে।
গত ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় ১৩টি মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের করে সহ¯্রাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীদেরকে আসামী করা হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ এসব হামলা-মামলা করে বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছে। কিন্তু তাদের স্বপ্ন কখনো চকরিয়া পেকুয়ার সাধারণ জনগণ পূরণ হতে দিবেনা। বিএনপি নেতাকর্মীদের তোলা অভিযোগ মোটেও সত্য নয় বলে দাবী করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মহাজোটের প্রার্থী জাফর আলম। বিএনপি এখন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।