বাজার খরচের চাপে নিম্ন আয়ের মানুষ

29

সম্প্রতি বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এজন্য কিছুটা চাপে পড়েছে কম আয়ের মানুষ। বাজারে পেঁয়াজের দাম এখনও লাগামহীন। চাল, তেল, চিনি, আলুসহ বেশ কিছু পণ্যের দামও বাড়তি। বাজার খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত বা গরিব মানুষ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের মানুষ দৈনিক গড়ে ৯৭৫ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৪০৬ গ্রামের বেশি চাল, আটা-ময়দাসহ অন্যান্য খাদ্যশস্য রয়েছে। এছাড়া ৬৫ গ্রাম আলু, ১৬৭ গ্রাম সবজি, মাছ ৬৩ গ্রাম, মাংস ও ডিম ৩৯ গ্রাম, ডাল ১৬ গ্রাম, ভোজ্যতেল ২৭ গ্রাম, পেঁয়াজ ৩১ গ্রাম, চিনি ৭ গ্রামসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য গ্রহণ করে গড় হিসেবে।
গরিবেরা তুলনাম‚লক অনেক কম খাদ্য গ্রহণ করে। উল্লেখিত নিত্যপণ্যগুলোর দাম স¤প্রতি বেশ বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় পণ্য চাল। চালের দাম গত কয়েকদিনে কেজিতে গড়ে ৫ টাকা হারে বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের মোটা চাল ৩৩ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সময়ে আটার দামও কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৩০ থেকে ৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। এখন প্রতি কেজি বেগুন, করলা ও বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনকি সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দামও কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ২৫ টাকা হয়েছে। এছাড়া মাছ, মাংস ও ডিম কয়েক মাস ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এসব খাদ্যপণ্যের রান্নায় ব্যবহার হয় মসলা। গত চার মাসে পেঁয়াজের দাম চার গুণ বেড়েছে। কেজি এখন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। একই সময়ে রসুনের দাম বেড়ে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আদার দাম দ্বিগুণ বেড়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের লিটারে গড়ে প্রায় ৫ টাকা বেড়েছে। এখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেল খোলা ৮৫ থেকে ৮৭ ও বোতলজাত ১০৫ থেকে ১১২ টাকা। গত এক মাসে চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা মসুর ডালের দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা, ভোজ্যতেল লিটারে ৪ টাকা ও চালের দাম কেজিতে ৪ টাকা বেড়েছে। দৈনিক তিন বেলা খাবার বাবদ ছয় মাস আগেও ৩’শ টাকা ব্যয় করতেন চন্দনাইশের রিকশাচালক আজম খান।
তিনি জানান, এখন দৈনিক বাজার করতে ৫০ টাকা বেশি লাগছে। ৬০ বছর বয়সী মুন্সি মিয়া বলেন, বাজার খরচ বাড়লেও আয় বাড়াতে পারেননি। ছয় মাস আগে যে আয় হতো, এখনও তাই হচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী, দাম বৃদ্ধি পাওয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা উচিত। তাহলে গরিব মানুষের উপকার হতো। এ ক্ষেত্রে শুধু জেলা-উপজেলায়ও খোলাবাজারে এসব পন্য বিক্রি বাড়াতে হবে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসবে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে দু-একটি পণ্য নয়, সব পণ্যের নিয়মিত তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তারা।